ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ হঠাৎ করে কোথাও যেন বাজ পড়ার শব্দ হলো। ব্যস! মুহূর্ত কয়েকের অপেক্ষা । বিদ্যুৎ চলে গেলো পুরো এলাকায়। বলা নেই, কওয়া নেই ,ঝুমবৃষ্টি। আমি দৌড় দেবো কিনা ভাবছি। দাদার দিকে ঘুরে তাকালাম। ও যেন কেমন করে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ইতস্তত বললাম, ভিজবি? ও সম্বিত ফিরে পেলো। ভিজতো গেলাম যে, নতুন করে আর কী ভিজবো! আমি ছোটবেলার মতো আবদার করলাম । চল্-না ,লেক পর্যন্ত ঘুরে আসি। দাদা মাথা নাড়লো । নাহ্, বাসায় চল্। মা চিন্তা করবে । দাদা হাঁটছে। পিছু পিছু আমি । সামান্য সময়ের বৃষ্টি। অথচ ভিজে জপজপে অবস্থা্ ছোটআপা আর মা বড় আপার মেডিকেল রিপোর্ট আনতে জাননি। কিন্তু দাদার অবস্থা দেখ মা একদম ঘাবড়ে গেলেন। রাতভর জায়নামাজে বসে দোয়াদরুদ পড়তে লাগলেন আনমনে। গত কিছুদিন ধরেই রাতে ঠিকমতো ঘমাতে পারে না ছোট আপা। হঠাৎ হঠাৎ জেগে ওঠে। ডাইনিং-এ এসে ঘামতে থাকে। জগ থেকে পানি ঢেরে ঢক্ ঢক্ করে মুখে ঢালে। আর সে বড় আপাকে জড়িয়ে ধরে মরার মতো পড়ে রইল সারারাত। মনে হয় যেন কাঁদতে ভুলে গেছে।ভোলে গেছে। ভোরের দিকটায় শুধু বড় আপাকে বলতে শুনলাম, সরতো তরু। আমাকে এভাবে হাত দিয়ে পেঁচিয়ে রাখবি না-তো।আমার কিচ্ছু হয়নি।
তৌহিদুর রহমান
জন্ম ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৫ সালে। বাবা এম.এ. মজিদ সরকার, মা লায়লা মজিদ। স্থায়ী নিবাস কুড়িগ্রাম। চার ভাই-বােনের মধ্যে সবার ছােট তিনি। চাকরিজীবী বাবার বদলির সুবাদে দশ স্কুল, তিন কলেজ আর আট জেলায় শিক্ষাজীবন। পিএইচডি হিসাববিজ্ঞানে। মেধাবী ছাত্র হিসেবে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন প্রতিটি বিদ্যায়তনে। পেশায় শিক্ষক। বিচরণ লেখক হিসেবে। স্বপ্ন দেখেন দেশে একটি স্বতন্ত্র সাহিত্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার। কুড়িগ্রাম জেলার নিভৃত গ্রাম মধুপুরের আপন আঙিনায় তৌহিদুর রহমান সাহিত্য পরিষদ গড়বার।
লেখালেখির শুরু ছাত্রজীবনে । উপন্যাস, ছােটগল্প, কবিতা, ছড়া, ছাপা হতাে বিভিন্ন স্থানীয়-জাতীয় দৈনিকে। লেখক হিসেবে প্রাপ্ত পদকগুলাের মধ্যে বনলতা সাহিত্য পদক, অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক, দেওয়ান হাছনরাজা, মহাকবি কায়কোবাদ স্বর্ণপদক উল্লেখ্য। উল্লেখযােগ্য প্রাপ্ত সম্মাননা: মহাত্মা গান্ধী পিস অ্যাওয়ার্ড, বামসাফে, ইউনাইটেড টেলিফিল্ম, স্বাধীনতা সংসদ, মাদার তেরেসা রিসার্চ সেন্টার।
উপন্যাসে স্বাচ্ছন্দ্যবােধ করলেও কবিতা, ছােটগল্প, শিশু-কিশাের সাহিত্য সবদিকে তাঁর সমান বিচরণ।