বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপ্তি ও গভীরতার বড় পরিচয় বহন করে নৌ-কমান্ডোদের ভূমিকা, একাত্তরের মধ্য আগস্টে যার চকিত উদ্ভাস অবাক করেছিল বিশ্ববাসীকে, বিপুলভাবে প্রাণিত করেছিল দেশের মানুষদের। তারপর দশ নম্বর সেক্টরভুক্ত নৌ-কমান্ডোদের কীর্তিকথা জানতে আরো অনেক সময় লেগেছিল। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পর এই ছবি যে দেশবাসীর কাছে পূর্ণভাবে ফুটে উঠেছে তেমন বলা যায় না। গুটিকয় গ্রন্থে নৌ-মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী বিম্বিত হয়েছে, তবে অনেক কথা বলার ও জানবার এখন রয়েছে বাকি। সেই অভাব পূরণে এগিয়ে এসেছেন মো. শাহজাহান কবির বীরপ্রতীক, প্রথম থেকে শেষাবধি নৌকমান্ডো অপারেশনের সঙ্গে যিনি ছিলেন যুক্ত, সাহসিকতার জন্য পেয়েছেন সম্মাননা। এমন একজন নৌযোদ্ধা যখন যুদ্ধদিনের অভিজ্ঞতার গ্রন্থরূপ দিতে অগ্রসর হন, নিজের কথা নয়, আপন সহযোদ্ধা ও কমান্ডো বাহিনীর কথা বলতে আগ্রহী হন, বিশেষভাবে নজর দেন চাঁদপুর অঞ্চলে পরিচালিত নৌ-মুক্তিযুদ্ধের প্রতি, তখন আমরা লাভ করি ব্যতিক্র এক গ্রন্থ। নৌ-কমান্ডো গঠনের পটভূমিকা মেলে ধরে চাঁদপুরে তাঁদের অভিযানের সবিস্তার বিবরণ দিয়েছেন লেখক। আরো যোগ করেছেন অভিযান-সম্পৃক্ত যোদ্ধাদেরব্যক্তি-পরিচিতি, যা গ্রন্থকে দিয়েছে আলাদা মাত্রা। চাঁদপুরের নৌ-মুক্তিযুদ্ধ গ্রন্থ তাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসমালায় হয়ে উঠেছে অনন্য সংযোজন।