ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ বুধবার হলো মুহিবের মিথ্যাদিবস। মিথ্যাদিবসে রাত এগারোটা উনষাট মিনিট পর্যন্ত সে মিথ্যা কথা বলে। তার এই ব্যাপারটা একজন শুধু জানে। সেই একজনের নাম লীলা। লীলার বয়স একুশ। সে ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। অনার্স সেকেন্ড ইয়ার। বিষয় ইংরেজি সাহিত্য। লীলার সবই সুন্দর। চেহারা সুন্দর, চোখ সুন্দর, মাথার কোঁকড়ানো চুল সুন্দর। ক্লাসে তাঁর একটা নিক নেম আছে- সমুচা। এমন রূপবতী একটা মেয়ের নাম সমুচা কেন সেটা একটা রহস্য। নাম নিয়ে লীলার কোনো সমস্যা নেই। সে বন্ধুদের টেলিফোন করে নির্বিকার ভঙ্গিতে বলে, আমি সমুচা বলছি। মুহিবের বয়স ত্রিশ। গায়ের রঙ কালো। বেশ কালো। কালো ছেলেদের ঝকঝকে সাদা দাঁত হয় মুহিবের দাঁত ঝকঝকে সাদা। পেপসোডেন্ট টুথপেস্ট কোম্পানি একবার তাকে টুথপেস্টের বিজ্ঞাপনের জন্যে সিলেক্ট করেছিল। ডিরেক্টর সাহেব তাকে দেখে বললেন, এই ছেলের চেহারায় তো কোনো মায়া নেই। চোখ এক্সপ্রেশনসলেস।একে দিয়ে হবে না।
হুমায়ূন আহমেদ
কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ‘নন্দিত নরকের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। এই উপন্যাসে নিম্নমধ্যবিত্ত এক পরিবারের যাপিত জীবনের আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন, মর্মান্তিক ট্রাজেডি মূর্ত হয়ে উঠেছে। নগরজীবনের পটভূমিতেই তাঁর অধিকাংশ উপন্যাস রচিত। তবে গ্রামীণ জীবনের চিত্রও গভীর মমতায় তুলে ধরেছেন এই কথাশিল্পী। এর উজ্জ্বল উদাহরণ অচিনপুর ফেরা মধ্যাহ্ন মুক্তিযুদ্ধ বারবার তাঁর লেখায় ফুঠে উঠেছে। এই কথার উজ্জ্বল স্বাক্ষর জোছনা ও জননীর গল্প ১৯৭১ আগুনের পরশমণি শ্যামল ছায়া নির্বাসন প্রভৃতি। উপন্যাস গৌরীপুর জংশন যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ চাঁদের আলােয় কয়েকজন যুবক'-এ জীবন ও চারপাশকে দেখার ভিন্ন দৃষ্টিকোণ মূর্ত হয়ে উঠেছে ‘বাদশা নামদার’ ও ‘মাতাল হাওয়ায় । অতীত ও নিকট-অতীতের রাজরাজড়া ও সাধারণ মানুষের গল্প ইতিহাস থেকে উঠে এসেছে। গল্পকার হিসেবেও হুমায়ূন আহমেদ ভিন্ন দ্যুতিতে উদ্ভাসিত। ভ্রমণকাহিনি, রূপকথা, শিশুতােষ, কল্পবিজ্ঞান, আত্মজৈবনিক, কলামসহ সাহিত্যের বহু শাখায় তাঁর বিচরণ ও সিদ্ধি।
হুমায়ুন আহমেদের জন্ম ১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ এবং মৃত্যু ১৯ জুলাই ২০১২।