ভূমিকা বিশ্বজুড়ে এখন সায়েন্স ফিকশনের জয় জয়কার। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও এর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। দেশে আগের তুলনায় সায়েন্স ফিকশন লেখা হচ্ছে অনেক অনেক বেশি। ১৮৯৬ সালে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ‘নিরুদ্দেশের কাহিনী’ লিখে বাংলা ভাষায় সায়েন্স ফিকশনের যে ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন সে ভিত্তি এখন অনেক অনেক বেশি শক্তপোক্ত। অনেকে এগিয়ে এসেছেন সাহিত্যের এই শাখাকে সমৃদ্ধ করার জন্যে। কারো কারো লেখা ইতোমধ্যে পাঠকদের মন জয় করেছে। বাংলা ভাষায় এক ডজন সায়েন্স ফিকশন গল্প নিয়ে সংকলনটি করা হয়েছে। লেখকসূচিতে দেশের খ্যাতনামা লেখকের পাশাপাশি নবীন লেককদের লেখা সংকলিত হয়েছে। আশা করি সংকলনটি পাঠকদের ভালো লাগবে। হাসান খুরশীদ রুমী ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ১২ ডিসেম্বর, ২০০৪ সূচিপত্র *সম্পর্ক *মহাজাগতিক কিউরেটর *রুকুর বন্ধু *গ্রাস *অনিত্য *কাল সকাল ভালবাসার *রেড ম্যাসেজ *ইহঁ গ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণী *অবিনশ্বর *শ্রদ্ধা *শিকার *আত্মহত্যা
আহসান হাবীব (কার্টুনিস্ট)
আহসান হাবীবের জন্ম ১৫ নভেম্বর ১৯৫৭, সিলেট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগােলে মাস্টার্স করে জীবনের প্রথম চাকরি ব্যাংকে। তারপর হঠাৎ পেশা বদল। পেশা হিসেবে বেছে নিলেন কার্টুন। দেশের একমাত্র স্যাটায়ার ম্যাগাজিন ‘উন্মাদ’-এর সম্পাদক ও প্রকাশক... ত্রিশ বছর ধরে। ম্যাগাজিন নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে যেন তার ভালাে লাগে। অনেক পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযােগ্য দুটি পত্রিকা হল- কিশাের পত্রিকা ‘দুরন্ত’ ও সায়েন্স ফিকশন ম্যাগাজিন ‘ট্রাভেল এন্ড ফ্যাশন। কার্টুন আঁকার পাশাপাশি জোকস তাঁর প্রিয় বিষয়। বিষয়টিকে তিনি প্রায় কুটিরশিল্প পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। বিখ্যাত সেই স্প্যানিস দার্শনিকের মতাে তিনিও মনে করেন যে দিনটা হাসা গেল না সেই দিনটা নিদারুণ ভাবেই ব্যর্থ!'
জোকস ছাড়া রম্য রচনায়ও তিনি পারদর্শী। এই লেখকের বর্তমান বয়স ৫৫। শিক্ষিকা স্ত্রী আফরােজা আমিন আর একমাত্র মেয়ে শবনম আহসানকে নিয়ে তার নিজস্ব জগৎ
সাজ্জাদ কবীর
রাসেল আহমেদ
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
মুহম্মদ জাফর ইকবাল জন্ম : ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২, সিলেট। বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, পিএইচডি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন থেকে। ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং বেল কমিউনিকেশান্স রিসার্চে বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করে সুদীর্ঘ আঠার বছর পর দেশে ফিরে দীর্ঘদিন অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্ত্রী প্রফেসর ড. ইয়াসমীন হক, পুত্র নাবিল এবং কন্যা ইয়েশিম।
মশিউর রহমান
৪ জুন । চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার খয়ের হুদা গ্রামের একান্নবর্তী পরিবারে। বাবা ছিলেন ব্যবসায়ি। মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে বাবার ব্যবসায় ভাটা পড়ে। সেই সাথে সারা বাংলার দুর্ভিক্ষের ছোঁয়াটাও পুরােপুরি এসে পড়েছিল পরিবারে। সেখান থেকেই দারিদ্র্যের কষাঘাতে জীবন অতিবাহিত হতে থাকে । তবুও থেমে থাকেনি কোনােকিছু। জীবনকে চিনতে হয়েছে, জানতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে বলা যায় দারিদ্র্য তাকে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রেরণা যুগিয়েছে। বাবা-মা ও বড় ভাইদের অনুপ্রেরণায় নিজেকে বিকশিত করতে পেরেছেন। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশােনা করলেও, সাহিত্যে আগ্রহের কারণে বাংলা সাহিত্যে এম.এ. করেছেন। ইন্টারমিডিয়ের পর কর্মজীবনের শুরু প্রথমে টিউশনি, পরে কম্পিউটার গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে নানা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি । বর্তমানে প্রচ্ছদ ডিজাইনার হিসেবে নিজের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। এ পর্যন্ত দুই সহস্রাধিক বইয়ের প্রশংসিত প্রচ্ছদ ডিজাইন করে সুধীজনের প্রশংসা অর্জন করেছেন। লেখালেখির অভ্যাস ছেলেবেলা থেকেই। গ্রামের ক্লাবের দেয়াল পত্রিকায় প্রথম ছােটগল্প ‘সংগ্রামই জীবন' প্রকাশিত হয় ১৯৮৮ সালে । ১৯৯০ সালে ঢাকায় আসার পর দেশের প্রায় সব জাতীয় দৈনিক ও সাহিত্য ম্যাগাজিনে তার লেখা নিয়মিত ছাপা হচ্ছে। ছােটদের জন্য লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবােধ করেন। ছােটদের জন্য প্রকাশিত বই : মেঘ ও বৃষ্টির বন্ধুরা, একাত্তরের ছেলেটি, আমরা করবাে জয়, ভূতের সাথে হ্যান্ডশেক, ওরে বাবা ভূ-উ-ত, নীলডুমুরির ভয়ংকর রাত, অদৃশ্য মানব, ভূত গােয়েন্দা রহস্য, বিজ্ঞানের প্রথম পাঠ, বিজ্ঞানের দ্বিতীয় পাঠ, জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিচিত্র জগৎ, ছােটদের জগদীশচন্দ্র, ছােটদের মাদার তেরেসা, মাদার তেরেসা জীবন ও কর্ম, ছােটদের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বাংলার বীরশ্রেষ্ঠ ইত্যাদি । টইটম্বুর’-এ প্রকাশিত শিশুতােষ গল্প ‘ছােট্ট জোনাকি’র এনিমেটেড কার্টুন নির্মাণ করে একুশে টিভি (২০১১ সালের ঈদের অনুষ্ঠানের জন্য)। বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ : বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা, গাছ লাগাই পৃথিবী বাচাই, ডাইনােসর ও প্রাচীন পৃথিবীর জীবজন্তু, পৃথিবী ও সৌরমণ্ডল, সাগর থেকে মহাসাগর, গ্যালাক্সির পথে পথে, রহস্যময়ী চাদ । বড়দের জন্য প্রকাশিত বই : প্লেটোনিক প্রেম, ওরা বৃষ্টিতে ভিজেছিল, প্রচ্ছন্ন প্রণয়, উড়ে যায় স্বপ্নের পাখিরা ।
হুমায়ূন আহমেদ
কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ‘নন্দিত নরকের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। এই উপন্যাসে নিম্নমধ্যবিত্ত এক পরিবারের যাপিত জীবনের আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন, মর্মান্তিক ট্রাজেডি মূর্ত হয়ে উঠেছে। নগরজীবনের পটভূমিতেই তাঁর অধিকাংশ উপন্যাস রচিত। তবে গ্রামীণ জীবনের চিত্রও গভীর মমতায় তুলে ধরেছেন এই কথাশিল্পী। এর উজ্জ্বল উদাহরণ অচিনপুর ফেরা মধ্যাহ্ন মুক্তিযুদ্ধ বারবার তাঁর লেখায় ফুঠে উঠেছে। এই কথার উজ্জ্বল স্বাক্ষর জোছনা ও জননীর গল্প ১৯৭১ আগুনের পরশমণি শ্যামল ছায়া নির্বাসন প্রভৃতি। উপন্যাস গৌরীপুর জংশন যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ চাঁদের আলােয় কয়েকজন যুবক'-এ জীবন ও চারপাশকে দেখার ভিন্ন দৃষ্টিকোণ মূর্ত হয়ে উঠেছে ‘বাদশা নামদার’ ও ‘মাতাল হাওয়ায় । অতীত ও নিকট-অতীতের রাজরাজড়া ও সাধারণ মানুষের গল্প ইতিহাস থেকে উঠে এসেছে। গল্পকার হিসেবেও হুমায়ূন আহমেদ ভিন্ন দ্যুতিতে উদ্ভাসিত। ভ্রমণকাহিনি, রূপকথা, শিশুতােষ, কল্পবিজ্ঞান, আত্মজৈবনিক, কলামসহ সাহিত্যের বহু শাখায় তাঁর বিচরণ ও সিদ্ধি।
হুমায়ুন আহমেদের জন্ম ১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ এবং মৃত্যু ১৯ জুলাই ২০১২।
হাসান খুরশীদ রুমী
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল জন্ম ১ জানুয়ারি, খুলনা । বাবা বিশিষ্ট মুক্তিযােদ্ধা অধ্যক্ষ মােস্তাফিজুর রহমান এবং মা রাহিলা খাতুন। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন, এমবিবিএস পাশ করেন ১৯৯৩ সালে । ছাত্রজীবনে সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সার্জারি বিভাগে কর্মরত রয়েছেন। তিনি থােরাসিক সার্জারিতে এমএস করছেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি লেখালেখি করেন প্রচুর। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, পাক্ষিক ও মাসিকে নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন। যদিও লেখালেখির শুরুটা কবিতা দিয়েই, কিন্তু বর্তমানে বেশি ব্যস্ত স্বাস্থ্য বিষয়ক লেখালেখিতে । সায়েন্সফিকশন এবং ভৌতিকগল্পও লিখছেন প্রচুর । অনুবাদেও সমান দক্ষ। ইতােমধ্যে তার বেশ কিছু অনুবাদের বই বেরিয়েছে। প্রথম কবিতার বই একজন স্বপ্ন পুরুষের কাছে মৃত্যুর অনুবাদ প্রকাশিত হয় ১৯৮৯ সালে। বাংলায়। প্রথম দীর্ঘ সায়েন্সফিকশন কবিতা লেখেন তিনি, পৃথিবীর মৃত্যুতে কাঁদেনি কেউ শিরােনামের এই সায়েন্সফিকশন কবিতাটি প্রকাশিত হয় অন্যদিন পত্রিকায়। স্বাস্থ্য বিষয়ক লেখালেখিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৯ সালে পেয়েছেন। আনােয়ারা-নূর পুরস্কার। তাঁর স্বাস্থ্য বিষয়ক বইগুলাে ব্যাপকভাবে পাঠক জনপ্রিয় হয়েছে। রহস্য পত্রিকায় তিনি পাঠকদের স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশ্নের উত্তর দেন। উন্মাদ পত্রিকায় তিনি পরিকল্পনা বিভাগে রয়েছেন। তিনি একটি জাতীয় দৈনিকের সাব এডিটর।
ধ্রুব এষ
জন্ম : ১৯৬৭
মা: লীলা এষ
বাবা : ভূপতিরঞ্জন এষ
দশ হাজারের বেশি বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন পাশাপাশি লিখছেন। লিখতে পছন্দ করেন রহস্য কাহিনি, আদর্শ মানেন এডগার এলান পাে-কে। এ পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৪১। যতদিন পারেন প্রচ্ছদ করবেন এবং লিখবেন।
অমল সাহা
আলী ইমাম
আলী ইমাম। জন্ম : ৩১ ডিসেম্বর ১৯৫০ ব্রাহ্মণবাড়িয়া। পিতা : মরহুম আলী আকবর, মাতা : শাহজাদী বেগম। শিশু সংগঠক, সুবক্তা এবং ৬০০টির অধিক শিশুসাহিত্যবিষয়ক গ্রন্থের রচয়িতা। সাহিত্যের সবকটি শাখা, ছড়া-কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, জীবনী, ভ্রমণকাহিনি, অনুবাদ, বিজ্ঞান কল্পকাহিনি রচনা করেছেন। প্রথম গ্রন্থ প্রকাশ: ১৯৭৬ সালে গল্প সংকলন ‘দ্বীপের নাম মধুবুনিয়া। প্রকাশক বর্ণ মিছিল, ঢাকা। বাংলা একাডেমির ফেলাে। দেশের বিশিষ্ট সব পত্রপত্রিকায় লিখেছেন প্রচুর। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাবেক মহাব্যবস্থাপক। তাঁকে পেশাগত কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ঘুরতে হয়েছে। তার সামগ্রিক সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার, শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক, ইকো সাহিত্য পুরস্কার, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ স্বর্ণপদক, নওয়াব সলিমুল্লাহ পদক, জসীমউদদীন স্মৃতি সংসদ পুরস্কার, হােসেন আরা শিশুসাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, ছােটদের কাগজ শিশুসাহিত্য পুরস্কার, লুবনা জাহান সাহিত্য পুরস্কার, ইউরাে শিশুসাহিত্য পুরস্কার এবং নওয়াব ফয়জুননেসা স্বর্ণপদক, চন্দ্রাবতী শিশুসাহিত্য পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার।