ইলেভেন মিনিটস (হার্ডকভার) - পাওলো কোয়েলহো | বইবাজার.কম

ইলেভেন মিনিটস (হার্ডকভার)

বইবাজার মূল্য : ৳ ২১৬ (২০% ছাড়ে)

মুদ্রিত মূল্য : ৳ ২৭০





WISHLIST


Related Bundles


Bundle Title Price
1
পাওলো কোয়েলহো - এর সেরা ০৫ উপন্যাস

৳ ৭৯০



Overall Ratings (1)

Md. Al Faruk
21/03/2019

#বইবাজার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_মার্চ_২০১৯ বই আলোচনা-০২  বইয়ের নাম: ইলেভেন মিনিটস।  লেখকের নাম: পাওলো কোয়েলহো।  ধরণ: ব্রাজিলীয় মেয়ে মারিয়া'র(ছদ্মনাম) জীবনকাহিনী(উপন্যাস)   ব্যক্তিগত রেটিং: ৮.৫/১০।  ক্যাটাগরি: অনুবাদ।  অনুবাদক: গোলাম রহমান।  প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২০১৭খ্রি.  প্রকাশক: ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ।  পরিবেশক- যুক্তরাষ্ট্র : মুক্তধারা, জ্যাকসন হাইট, নিউইয়র্ক। যুক্তরাজ্য : সঙ্গীতা, ২২ ব্রিক লেন, পূর্ব লন্ডন। ইমেইল : [email protected]  ওয়েবসাইট : www.ittadigranthoprokash.com অনলাইন পরিবেশক : boibazar.com প্রচ্ছদ: আদিত্য অন্তর। পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২১৬.  মুদ্রিত মূল্য: ৩০০ টাকা ISBN: 978 984 904 597 7.  #লেখক পরিচিতি: পাওলো কোয়েলহো - এই ব্রাজিলীয় উপন্যাসিক ১৯৪৭ সালের ২৪ আগষ্ট ব্রাজিলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অনেক আন্তর্জাতিক পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন, তার মধ্যে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরাম কর্তৃক 'ক্রিস্টাল অ্যাওয়ার্ড ' অন্যতম। অ্যালকেমিস্ট তার লেখা উপন্যাসসমূহের মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত একটি উপন্যাস। এই উপন্যাসটি ৮০টি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। যার প্রায় ১৬০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে এবং তিনি পর্তুগীজ ভাষার সর্বকালের সর্বাধিক বিক্রিত বইয়ের লেখক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।  #অনুবাদকের পরিচিতি: গোলাম রহমান, জন্ম এবং বেড়ে ওঠা, বাকেরগঞ্জ, বরিশালে। পড়াশুনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যানে স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর। প্রায় দেড় যুগ চাকরি করেছেন পোশাক শিল্পের কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানিতে। এখন গ্রিন বিল্ডিং নিয়ে কাজ করছেন। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখির ইচ্ছা। ২০১৬ সালের বইমেলায় প্রকাশিত পাওলো কোয়েলহো'র দ্য অ্যালকেমিস্ট - এর অনুবাদ, যা যথেষ্ট পাঠকপ্রিয়তা পায়। সেই প্রেরণায় হাত দেন ইলেভেন মিনিটস অনুবাদে।  #ভূমিকা: বিখ্যাত লেখক পাওলো কোয়েলহো'র জনপ্রিয় একটি উপন্যাস 'ইলেভেন মিনিটস'। বন্ধুর মাধ্যমে এক পতিতার সাথে লেখকের দেখা এবং কথা হয়। কথা বলার সময় লেখক মারিয়া নামক মেয়েটির কাছ থেকে একটি ডায়েরি উপহার পান এবং তার অতীত জীবন সম্পর্কে অবগত হন। অতঃপর ইলেভেন মিনিটস'র যাত্রা শুরু।  #রিভিউ: কোন একসময় মারিয়া নামে এক বেশ্যা ছিল। এক মিনিট। 'কোন একসময়' দিয়ে শিশুদের সেরাগল্পগুলো শুরু হয় আবার 'বেশ্যা' শব্দটি বড়দর। প্রচ্ছন্ন অসঙ্গতি বই লেখা নিয়ে কিভাবে শুরু করা যায়? তবে যেহেতু জীবনের প্রতি মুহূর্তে আমরা আমাদের এক পা কল্পরাজ্যে এবং অন্য পা নরকে রেখে পথ চলি, তাই এভাবেই শুরু করা যাক। কোনো এক সময়ে মারিয়া(ছদ্মনাম) নামে এক বেশ্যা ছিল। তার বাবা একজন ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা, মা দর্জির কাজ করেন। তার বসবাস ছিল ব্রাজিলের প্রত্যন্ত এক শহরে। যেখানে মাত্র একটি করে সিনেমা হল, নাইট ক্লাব এবং ব্যাংক রয়েছে। তাই মারিয়া সবসময় আশা করে, তার স্বপ্নের রাজকুমার কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই একদিন এসে হাজির হবে, তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে যাবে, যাতে তারা দুজনে মিলে বিশ্ব জয় করতে। সে প্রথম প্রেমে পড়ে বয়স যখন এগারো ছিল। একদিন সকালে স্কুলে যাবার পথে ছেলেটি তার কাছে এসে বললো, সে একটি পেন্সিল ধার নিতে পারে কি না। মারিয়া কোন জবাব না দিয়ে খুব উত্তেজনা বোধ করলো এবং দ্রুত পদক্ষেপে সামনে এগিয়ে এলো। মারিয়া স্বপ্ন দেখছিল, ছেলেটি তার হাত ধরবে, স্কুল গেইট পার হয়ে বাইরে যাবে, রাস্তার প্রান্তসীমায় পৌঁছাবে! তবে ছেলেটি তার সাথে একটি কথাও বলেনি। মারিয়াকে স্কুল বর্ষের শেষ দিন পর্যন্ত ভালোবাসা এবং কষ্ট নিয়ে তৃপ্ত থাকতে হয়েছে। একদিন সকালে মারিয়ার মা তার ঘরে প্রবেশ করে রক্তের দাগওয়ালা চাদর দেখে হেসে বললেন, 'আজ থেকে তুমি যুবতী।' পরদিন তার মা যে বিশেষ পোশাক বিশেষ দিনে পরার জন্য বানিয়ে রেখেছিলেন, তা পরে স্কুলে গেল। পরিশেষে বন্ধুদের কাছে জানতে পারলো ছেলেটি পরিবারের সাথে অন্যত্র চলে গিয়েছে। তারপর তিন বছর পার হলো। মারিয়া ভূগোল আর গণিত শিখেছে। বয়স যখন ঠিক পনেরো , তখন পবিত্র সপ্তাহের পদযাত্রায় দেখা হওয়া একটি ছেলের প্রেম পড়লো। যাহোক, তার পনেরোতম জন্মদিন শুধু মুখ প্রসারিত করে চুম্বন করবে এই বার্তা দেয়নি, পাশাপাশি এও বলেছে ভালোবাসা মোটের উপর একটা যন্ত্রণার কারণ। এভাবে কেটে মারিয়ার কৈশোরের দিনগুলো। সে দিন দিন মোহনীয় হয়ে উঠলো। একের পর এক ছেলে বদলে তাদের সাথে ডেট করা শুরু করলো। তবে সে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে সে কখনো প্রেমে পড়বে না। তারপর এমন এক ডেটের দিনে গাড়ির পেছনের সিটে মারিয়া তার কুমারিত্ব হারালো। তার দলে একমাত্র কুমারী হিসেবে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে ছেলেটিকে তার ভিতরে প্রবেশের সুযোগ দিল। সে উনিশে উপনীত হলো। মাধ্যমিক স্কুল শেষ করে একটি পর্দার দোকানে চাকরি পেল। সেখানে তার বস সহসাই তার প্রেমে পড়ে গেলেন। ততদিনে মারিয়া জেনে গেছে নিজেকে অক্ষুণ্ণ রেখে কিভাবে পুরুষদের ব্যবহার করতে হয়। মারিয়া জানে সে দেখতে কতটা সুন্দরী। তার মা বলেছিলেন, 'সোনামণি রূপ বেশিদিন স্থায়ী হয় না।' মারিয়ার বস তাকে কোপাকাবানায় সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাব দিলেন। কে জানতো? এই সিদ্ধান্তই গাঢ় হয়ে থাকবে চিরকাল মারিয়ার জীবনে। মারিয়ার শখ সে নামীদামী মডেল হবে। সমুদ্রসৈকতে মারিয়ার সাথে এক দালালের পরিচয় ঘটে। লোকটি বললো সে সুইস। কাজ! ডলার! বিখ্যাত মডেল! চমকে গেল মারিয়া। এবং সিদ্ধান্ত নিলো সুইজারল্যান্ড যাবে। এছাড়া সুইজারল্যান্ড দারুণ চকলেট ও ঘড়ি উৎপাদন করে। মারিয়া লোকটির সাথে জেনেভায় গিয়েই বুঝতে পারলো সে দালালের খপ্পরে পড়েছে। এখানে এসেই মারিয়া তার পাসপোর্ট হারালো। ইউরোপিয়ানরা সকলেই একই রকম, তারা এখানে আসে এবং মনে করে ব্রাজিলের নারী মানেই ভোগবিলাসী এবং সাম্বা নাচ জানে। সে পুরোপুরি একজন পতিতায় পরিণত হতে বাধ্য হলো। জেনেভায় এসে মারিয়ার এক মহিলা লাইব্রেরিয়ানের সাথে পরিচয় ঘটে। আর মারিয়া সবসময় তার পাশে কুমারী মাতা মেরি'র ছায়া অনুভব করতো। মারিয়া তার স্বপ্ন পুরণে অদম্য ছিল। সে ব্রাজিলে ফিরে যেতে হিসেব করলো তিনমাস শক্তভাবে কাজ করতে হবে। মারিয়া এবার এক আরবের প্রেমে পড়লো এবং তা টিকলো মাত্র তিন সপ্তাহ। মারিয়ার সাথে মিলান নামে একজন বিখ্যাত চিত্রশিল্পীর পরিচয় ঘটে। মারিয়া এবার সিদ্ধান্ত নিলো, সে সুইজারল্যান্ড থেকে টাকা কামাবে এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে ব্রাজিল গিয়ে ফার্ম করবে। এজন্য তাকে প্রায় তিনমাস বেশি মানে আরো ছয়মাস পতিতাবৃত্তি করতে হবে। মারিয়ার মাঝে একটি বই লেখার স্বাদ জাগে। যেখানে একজন নারীর আর্তনাদ'র ব্যাখ্যা থাকবে। সে উদ্দেশ্যে সে তার স্মৃতি থেকে বিভিন্ন ঘটনা ডায়রিতে লিখে রাখতো। কিন্তু একঘেয়েমি চলে আশায় সে লেখা বন্ধ করে দিয়েছিল কোন এক সময়। মারিয়া কি টাকা রোজগার করতে পেরেছিল? কেমন কেটেছে তার সুইজারল্যান্ড'র বাকী সময়? কতদিন পর জন্মভূমি ব্রাজিলে ফিরে গিয়েছিল? তার স্বপ্ন কি পূরণ হয়েছিল? ভুল বশত নরকের জীবন তার কতটুকু আনন্দের বা বেদনার ছিল? সারাজীবনে তার সফলতা ইত্যাদি আরো চমকপ্রদ ঘটনা জানতে হলে ইন্টারন্যাশনাল বেস্ট সেলার বইটি পড়তে হবে। মারিয়ার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো আপনি কিন্তু আগ বাড়িয়ে উপলব্ধি করতে পারবেন না। আসল রহস্য ভিতরে গোপনীয়। লেখক অতি সুন্দর, সুনিপুণ ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরছেন, এবং আপনাকে ধীরেসুস্থে উপন্যাসটি মন দিয়ে পড়তে হবে। তবেই আপনি আসল মজা পাবেন। 'সমাপ্ত' কথাটি সিনেমার পর্দায় ভেসে ওঠার পর কী ঘটবে তা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। তবে যদি, একদিন, কেউ তাঁর (মারিয়ার) গল্প বলতে চায়, সে তাদেরকে এই বলে শুরু করতে বলবে, যেভাবে সব রূপকথার গল্প শুরু হয়। কোনো এক সময়……  #পাঠ প্রতিক্রিয়া: বইটির শিরোনাম দেখেই চমকে গিয়েছিলাম, আর যখন প্রিয় লেখক পাওলো কোয়েলহো'র লেখা, তখন তো তর সইছিল না। অনেক আগ্রহ নিয়ে বইটি পড়া শুরু করেছিলাম। এবং এটি আমাকে একটুও নিরাশ করেনি। আনন্দ, উত্তেজনায় শেষ করতে পেরেছিলাম পুরো বই। যখন বইটি পড়ছিলাম সময় কেমন মোহ'র মতো কেটেছিল। একজন সাধারণ মেয়ের জীবনকাহিনী, প্রত্যন্ত শহরে জন্ম, বেড়ে ওঠা, এগারো বছর বয়সে প্রথম প্রেমে পড়া, বারো বছর বয়সে কুমারী হয়ে উঠা, পনেরো বছর বয়সে বন্ধুদের সাথে তাল মেলাতে কুমারিত্ব হারানো, উনিশ বছর বয়সে পর্দার দোকানে চাকরী, বসের কোপাকাবানায় ঘুরতে যাওয়া, সেখান থেকে সুইজারল্যান্ড এবং যৌনতাকে জীবনের সাথে মিলিয়ে ফেলা। অসাধারণ, ধারাবাহিক প্রফুল্ল ভাবে সৃষ্ট উপন্যাস। সবদিক থেকেই স্বয়ংসম্পূর্ণ। একজন বালিকা, কিশোরী, নারী এককথায়........ তবে সবশেষে মারিয়া যে নরকীত জীবন পেছনে ফেলে লক্ষ্য স্থির করে নব উদ্যমে জন্মভূমি ব্রাজিলে ফিরেছে , কালো অতীতের স্বার্থকতা এখানেই! অনুবাদক গোলাম রহমান আমার মতে যথেষ্ট ভালো অনুবাদ করতে সক্ষম। তা তিনি পাওলো কোয়েলহো'র বিখ্যাত দুটি বই অনুবাদ করে ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছেন। উনার অনুবাদের হাত যেন সোনায় মোড়ানো!  #সেরা উক্তি:  * সবচেয়ে ভালো এমনভাবে বাঁচা যেন আজকের দিনটি আমার জীবনের প্রথম/শেষ দিন।  * আমার দেহে কোনো আত্মা নেই, আমি একটা আত্মা, যার দৃশ্যমান একটি অবয়ব আছে, যাকে শরীর বলে। * যৌনতার কৌশল হলো প্রাচুর্যকে নিয়ন্ত্রণের কৌশল। * আমাদের পূর্বপুরুষরা জানতেন না, যেমনটা আমরাও জানি না, স্রষ্টা আমাদের জীবন থেকে কী চায়--এটা সন্দেহাতীত যে, বই লেখা হয়েছে, ছবি চিত্রিত হয়েছে, কারণ আমরা কী তা ভুলে যেতে চাই না--আমরা ভুলে যেতে পারবও না। * আমি ছিলাম পৃথিবী, পর্বতমালা, বাঘ, যে নদীটি প্রবাহিত হয়ে লেকে পড়েছে, যে লেকটি সমুদ্রে পরিণত হচ্ছে।  * ইচ্ছাশক্তিকে দৃঢ় এবং প্রবলভাবে অনুভব করো।  #নামকরণের সংশ্লিষ্টতা - মারিয়া বেশ্যা ছিল, তার কাজ খদ্দেরকে যৌন তৃপ্তি দেয়া। কাজটি করতে মূলত এগারো মিনিটের মতো সময় ব্যয় হয়। এগারো মিনিট, বিশ্ব যার চারপাশে ঘূর্ণায়মান তার সময় মাত্র এগারো মিনিট। তাই উপন্যাসটি মূলত মারিয়া একসময় যে বই প্রকাশ করার জন্য ডায়রিতে লিখতো তার নাম হলো এগারো মিনিট।  আপনার পাঠ শুভ হোক।  written by: Arafat Tonmoy(বুনোহাঁস)।


PAYMENT OPTIONS

Copyrights © 2018-2024 BoiBazar.com