‘সামনের ব্রেক নষ্ট, কার্বোরেটারে জ্যাম লেগে পেট্রল পাস হয় না, প্লাগে খালি মবিল ওঠে, হর্ন ঠিক নাই, রিং-পিস্টন দুর্বল, সাইডলাইট জ্বলে না... রঞ্জুর মোটর সাইকেলের কন্ডিশন আপাতত এরকমই। এরকম কন্ডিশনের একটা মোটর সাইকেল পুষে রাখার বিন্দুমাত্র সাধ বা সাধ্য ওর নেই, কিন্তু এটা বিক্রি করে দেবার কথা তুললেই বাপের কাশিটা বেড়ে যায়। কাশির ধমকে বলবার কথাটাকে ভেঙে ভেঙে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলে বাপ বলে, ওই কাজ করিস না বাপ। ওই কাজ করিস না। তখন রঞ্জুর ইচ্ছা করে মোটর সাইকেলের উপরে বুড়ো বাপকে বসিয়ে অটোস্টার্ট দিয়ে ছেড়ে দেয়। দুটোই গিয়ে খাদে নর্দমায় চিৎ হয়ে শুয়ে পড়–ক।’ আধমরা বাপ আর একটা আধাবিকল মোটর সাইকেল নিয়ে মহা-টানাপোড়েনে রঞ্জুর জীবন। তারই সমান্তরালে দুই বন্ধু সু আর গু’র উদ্ভট, রহস্যময় কায়কারবার। হাসি-খেলার মধ্য দিয়ে রঞ্জু আবিষ্কার করতে থাকে নারী, পুরুষ, সংসার, জীবন, রাষ্ট্র সবই এক-একটা ইঞ্জিনের গতিতে চলে, যে-ইঞ্জিনের নিয়তিই হল একদিন বিকল হয়ে যাওয়া।
শুভাশিস সিনহা
জন্ম ১৯৭৮ সালের ২৯ জানুয়ারি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ঘোড়ামারা গ্রামে। পিতাÑলালমোহন সিংহ, মাতাÑফাজাতম্বী সিনহা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন। নিজ গ্রামে স্বপ্রতিষ্ঠিত মণিপুরি থিয়েটার ও লেখালেখি নিয়ে তৎপর আছেন। তিনি হওয়া না-হওয়ার গান কাব্যগ্রন্থের জন্য এইচএসবিসি-কালি ও কলম তরুণ লেখক পুরস্কার এবং কুলিমানুর ঘুম উপন্যাসের জন্য ব্র্যাক-ব্যাংক সমকাল সাহিত্য পুরস্কার (হুমায়ূন আহমেদ পুরস্কার) লাভ করেছেন। নাট্যক্ষেত্রে অবদানের জন্য পেয়েছেন জাকারিয়া স্মৃতিপদক, তনুশ্রী পদক, আবদুল জব্বার খান স্মৃতিপদক ও জীবনসংকেত সম্মাননা। মণিপুরি সাহিত্যে অবদানের জন্য ভারতের আসাম থেকে দিলীপ সিংহ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার এবং মণিপুরি নাট্যকলায় বাংলাদেশের পৌরি প্রবর্তিত গীতিস্বামী অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন।