দওয়াতুল উলামা লাখনৌ, ভারত গত ১৫, ১৬ ও ১৭ মে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে ফিকাহ ও ফতোয়া প্রতিপাদ্যের ওপর তিনদিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। কর্মশালা উপলক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয় যে, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ.-এর ফিকাহ, ইজতিহাদ, তাকলিদ ও নবোদ্ভূত সমস্যাবলির সমাধানকল্পে প্রদত্ত সংকলিত লেখাগুলো; যা বিভিন্ন রচনাবলির মাঝে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, সেগুলো একত্র করে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করা হোক। নিঃসন্দেহে সেই সংকলিত গ্রন্থটি হবে কর্মশালায় আগত সকলের জন্য উত্তম উপহার।
এই গ্রন্থটি মাকতাবাতুল হাসান বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের হাতে তুলে দেয় এরও বেশ কয়েক বছর পর। গ্রন্থটি পাঠকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে। ফলে গ্রন্থটির পুনর্মুদ্রণের চাহিদা দেখা দেয়। ইতিমধ্যে নতুন মোড়কে গ্রন্থটি পুনরায় ছেপে এসেছে। যা ছিল বাঙালি পাঠকদের অনেকদিনের চাওয়া।
মাওলানা আবদুল্লাহ আল ফারূক
সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ.
আল্লাহর পথের এক মহান দাঈ, ইলমে ওহীর বাতিঘর। যুগশ্রেষ্ঠ মনীষী। খাঁটি আরব রক্তের গর্বিত বাহক। বিশ্বময় হেদায়াতের রােশনি বিকিরণকারী। উম্মতের রাহবার ও মুরব্বি। কল্যাণের পথে আহ্বানে চিরজাগ্রত কর্মবীর।
জন্ম ১৯১৪ ঈসাব্দে। ভারতের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতার সূতিকাগার উত্তর প্রদেশের রাজধানী লাখনৌর রায়বেরেলীতে। প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া আদ্যোপান্তই দারুল উলুম নদওয়াতুল ওলামায়। অধ্যাপনা জীবনের সিংহভাগও এই প্রতিষ্ঠানেই নিবেদিত ছিল। । আল্লামা নদভীর খ্যাতির সূচনা হয় বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকে; সীরাতে সাইয়েদ আহমাদ শহীদ রচনার মাধ্যমে। গ্রন্থটি গােটা ভারতবর্ষে তাঁকে পরিচিত করে তােলে। এরপর তিনি রচনা করেন মা যা খাসিরাল আলাম বিনহিতাতিল মুসলিমীন নামক কালজয়ী গ্রন্থ। যা তাকে প্রথমত আরববিশ্বে ও পরবর্তীতে বৈশ্বিক সুখ্যাতি এনে দেয়। এ পর্যন্ত গ্রন্থটির শত শত সংস্করণ বেরিয়েছে।
বিগত প্রায় পৌনে এক শতাব্দী ধরে তাঁর কলম অবিশ্রান্তভাবে লিখেছে মুসলিম ইতিহাসের গৌরবদীপ্ত অধ্যায়গুলোর ইতিবৃত্ত। সীরাত থেকে ইতিহাস, ইতিহাস থেকে দর্শন ও সাহিত্য পর্যন্ত সর্বত্রই তার অবাধ বিচরণ । উর্দ থেকে তার আরবী রচনাই যেন অধিকতর অনবদ্য। আল্লামা নদভী জীবনে যেমন পরিশ্রম করেছেন, তেমনই তার স্বীকৃতিও পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক বহু ইসলামী প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সদস্য ছিলেন। তিনি একাধারে রাবেতায়ে আলমে ইসলামী এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, লখনৌর বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম নাদওয়াতুল-উলামা-এর রেকটর এবং ভারতীয় মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফরম মুসলিম পার্সোন্যাল ল বাের্ডের সভাপতি ছিলেন।
ইসলামের এই মহান সংস্কারক ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর জুমার আগে সুরা ইয়াসীন তিলাওয়াতরত অবস্থায় ইনতিকাল করেন। সাত খণ্ডে রচিত তারিখে দাওয়াত ও আযীমত তার। আরেকটি কালজয়ী রচনা যার অনবদ্য অনুবাদ সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস। বাংলাভাষী পাঠকদের হাতে বইটির সার্থক অনুবাদ তুলে। দিতে পেরে আমরা আল্লাহর শােকরিয়া আদায় করছি।
Title :
ফিক্বাহ সংকলন -প্রাসঙ্গিক কিছু কথা (পেপারব্যাক)