একজন আজন্ম প্রতিবাদী মানুষ ছিলেন আহমদ ছফা। সব অসংগতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এক দৃপ্ত কণ্ঠস্বর। তাঁর মধ্যে যেন ঐশ্বরিক কিছু ছিল। তাঁর দৃঢ়বিশ্বাস ছিল ইতিহাস এবং অমানবিক অবস্থান থেকে এদেশকে উত্থিত হয়ে হলে প্রয়োজন একটি পুনর্জাগরণের-- শিল্পে, সাহিত্যে, দর্শনে। নইলে রাজনীতি তো বটেই, আমাদের প্রাত্যহিক কর্মকাণ্ড ভণ্ডুল হবে অশ্লীল কূপমণ্ডূকতায়, ঈর্ষায় আর খুনোখুনিতে। তিনি এমন একটা পুনর্জাগরণের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন জীবনভর। সাহিত্যকে তিনি পরিচর্যা করেছেন পিতৃসুলভ স্নেহে। তাঁর মত এত তীব্রভাবে এদশকে হয়ত আর কেউ ভালোবাসতে পারেন নি। তাঁর পা দুটো ছিল যেন শেকড়ের মত মাটির ভিতর প্রোথিত। তিনি বলতেন, ‘আমি একটা ইতিহাসের ভিতর থেকে উঠে এসেছি।’ খোদ ইতিহাসের ভিতর থেকে যার উত্থান, সেও এক ইতিহাস। তিনি তাঁর আচরণে, তাঁর দেশপ্রেম ও দৃঢ়তায়, স্পষ্টবাদিতায় ও নির্ভীকতায় নায়ক হয়ে দেখা দিয়েছেন বারে বারে। তিনি জন্মেছিলেন 1943 সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষলগ্নে; মৃত্যু 2001 সালে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে 2001-এর এই দীর্ঘ রাজনৈতিক ও সামাজিক পটভূমিকায় বেড়ে ওঠা সদা সরব একজন লেখক-সর্বোপরি একজন পুরুষোত্তম মানুষের জীবনচরিত এই উপন্যাস। কালের নায়ক।
গাজী তানজিয়া
জন্ম ১লা ফেব্রুয়ারি ১৯৭৭। সমাজতন্ত্রের আদর্শে প্রভাবিত হলেও পুরোপুরি সমাজতন্ত্রী নন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব আইওয়া থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর। সঙ্গীতে তালিম নেন শৈশব থেকেই, সঙ্গে আঁকা-আঁকি। তবে সবকিছু ছাপিয়ে লেখালেখিকেই একমাত্র প্রকরণ হিসেবে বেছে নিয়েছেন। জাতীয় দৈনিকে রাজনৈতিক বিন্ধ রচনার মধ্য দিয়ে গণমাধ্যমে লেখালেখির শুরু। গল্প, উপন্যাস ছাড়াও লেখেন শিশু-কিশোরদের জন্য। তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘আনন্দ আলো’ সাহিত্য পুরস্কার ২০১০-এ ভূষিত হয়। প্রকাশিত গ্রন্থ : ১. জাতিস্মর (উপন্যাস), ২. পৃথিবীলোক (উপন্যাস), ৩. বায়বীয় রঙ (উপন্যাস), ৪. অরক্ষিত দেশে অবরুদ্ধ সময়ে (নিবন্ধ সংকলন) ও ৫. সবুজ ঘাসে মুক্ত বেশে (কিশোর গল্প সংকলন)।