লিভ টু বি হানড্রেড অ্যান্ড এনজয় ইট (হার্ডকভার)

ভূমিকা

২১২৯ সালে আমার ২৫০ (দুশ পঞ্চাশ) বছরের জন্মদিন উদযাপন করতে যাচ্ছি আমি। দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে বলতে পারি, যদি কোনাে দৈব কারণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা আনবিক বােমার বিস্ফোরণ অথবা কোনাে রকমের দুর্ঘটনা না ঘটে তখন সেই দিনটি পর্যন্ত বেঁচে থাকবাে আমি।

আমার বইখানি যারা পড়বেন এবং আমার পদ্ধতির অনুশীলন করবেন সবাইকে আমার ২৫০ তম জন্মদিনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, এবং আশা করি তারাই পারবেন। কারণ তারা জানতে ও শিখতে পারবেন কি আবিষ্কার করেছি আমি? বার্ধক্য বলতে মূলত তেমন কিছু নেই। আপনি যতটুকু চাইবেন ততটুকুই বাঁচতে পারবেন। ঐ অনুষ্ঠানে বয়সের ভারে ন্যুজ, দাঁত-চোখ-চুল হারানাে খামখেয়ালি কতিপয় অশীতিপর থুড়থুড়ে বৃদ্ধের সাথে সাক্ষাৎ ঘটার কোনাে সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করবেন না। আমাদের শরীর হবে উচ্ছল তারুণ্যে উজ্জীবিত, ২০০ (দুশাে) বছর কিংবা তার চেয়ে কিছু কম সময়ের সঞ্চিত অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ এবং সবল। কারণ আমাদের দেহের যৌবনদীপ্ত কোষকলাসমূহকে রেখে অবশিষ্ট বাকি সবকিছুকে ৰ্বিাসিত করেছি, নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীবন্ত সকল কোষকলার কর্মক্ষমতা এবং বেড়ে ওঠা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি। কিভাবে এই অসাধ্য সাধন করার শক্তি অর্জন করা সম্ভব এটাই হচ্ছে এই বইয়ের প্রকৃত উদ্দেশ্য।

তারুণ্য এবং প্রাণশক্তিতে পরিপূর্ণ একটি সড়ক নির্মাণ করা কিন্তু মােটেই সােজা কাজ নয়। একটি শরীরে যখন বার্ধক্য এসে বাসা বাঁধতে আরম্ভ করে, এমন কোনাে যাদুকরী শক্তি কিংবা জীবনের রসায়ন অথবা যৌবনের কোনাে ঝরনাধারা নেই, যাতে অবগাহণ করে বার্ধক্যে আক্রান্ত কোনাে শরীর অথবা মনকে সংরক্ষণ করা যায়। আধুনিককালে আবিষ্কৃত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সংস্থাপন বা এক শরীর থেকে আরেকটি শরীরে সংযােজন কিংবা ট্রান্সপ্লান্ট, চিকিৎসা বিজ্ঞানের তাবৎ পরীক্ষানিরীক্ষার কোনােটাই ধােপে টিকবে না। কৃত্রিম সাহায্য কেবল সাময়িক সময় পর্যন্ত বয়সের কার্যক্রমকে থামিয়ে রাখতে পারে। জীবনের অন্যান্য সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি কাজের মতােই নিজেকেই উদ্যোগটি গ্রহণ করতে হবে। শাস্বত তারুণ্যের গুপ্ত রহস্য আমাদের সকলের মধ্যে বিদ্যমান। কেবল জানতে হবে, মহা গুরুত্বপূর্ণ এই প্রাণশক্তিকে কিভাবে কাজে লাগাব আমরা?

কোনাে রকমের ভুল বােঝাবুঝি যাতে না ঘটে সেজন্যে প্রথমেই একটি বিষয় খােলাসা করে রাখতে চাই, ঔষধ কিংবা চিকিৎসাশাস্ত্রের নিন্দা করছি না আমি। বিবর্তনবাদের আধুনিক বিশ্বের প্রায় সমগ্র জনগােষ্ঠীর কাছে স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে ডাক্তাররাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন। আমাদের শরীরের যে কোনাে রােগের উপশম ঘটানাের অত্যাশ্চর্য ক্ষমতা রয়েছে মনের মধ্যে এবং এই আরােগ্য চিরস্থায়ী অবস্থায় বজায় রেখে আমাদের স্বাস্থ্যকে উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত আমাদের চিকিৎসকদের এ ব্যাপারে কোনাে প্রকারের পরােক্ষ ধারণা পর্যন্ত নেই।

কিন্তু আমার এই পদ্ধতিতে কোনাে রকমের ফিফটি ফিফটি ফর্মুলা নেই, ঔষধও খেলাম আবার এদিকে মানসিক শক্তি প্রয়ােগের মাধ্যমে রােগ সারালাম, এটি হবার জো নেই। তেল আর জলের মতাে, কোনাে অবস্থায় দুটির একসাথে মেশার কোনাে উপায় নেই। কারণ মানসিক শক্তির ওপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন না করতে পারলে মানসিক শক্তিরও চূড়ান্ত প্রয়ােগ সম্ভব হবে না।

প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি রয়েছে যাদের, মনকে প্রশিক্ষণ দেবার মতাে ধৈর্য এবং মনের ওপর পুরােপুরি আস্থা রাখার মতাে মনােবল যাদের আছে, তারা ডাক্তার এবং ঔষধের কাছ থেকে দূরে থাকতে পারবে। আর যারা সনাতন পদ্ধতিকে অনুসরণ করাকে শ্রেয় মনে করবে, তারা চিকিৎসা বিজ্ঞান, ডাক্তার এবং ফার্মেসিগুলােকে দিনরাত ব্যস্ত রাখবে।