ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ কিক্রেট মানে উইকেট থেকে উইকেটের মধ্যে দৌড়। নির্দিষ্ট মাপের দুরত্বে এক ক্রীড়াকৌশল। কিন্তু জীবনের লাল বল ছুটে চলে তার নিজের মর্জিতে। সমরেশ মজুমদারের এই দুরন্ত উপন্যাসে ক্রিকেট, কবিতা ও নারীর সঙ্গে প্রাণের খেলা। মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে স্বপ্নাশিষ কখনও কিক্রেটার শচীন কিংবা সৌরিভ হতে পারবে না হরিমাধবদা জানতেন। তবু অবিকল্প পরিশ্রম ও কঠোর অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে স্বপ্নাশিষকে তৈরি করছিলেন। হরিমাধবদাকে লুকিয়ে শ্যামনগরে একটা খেপের খেলা খেলতে গিয়ে স্বপ্নাশিষের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল আহিরের-মফস্বলের একটি মিষ্টি মেয়ে। বাইরের আঘাতকে যে হৃদয়ের আসনে বসিয়ে নেয় অবলীলায়। স্বপ্নাশিষ আবিষ্কার করে ক্রিকেটের আচরিত বিধিনিয়ম অন্য। জীবনে শুধু দৌড়াতেই চায় না, থিতু হয়ে বসতে চায় সংসারে প্যাভিলিয়নে। অনেক বাধা পেরিয়ে আহিরকে আপন করে, পেয়েছিল স্বপ্নাশিষ। কিন্তু তারপরেই জীবন শুরু করল তার দ্বিতীয় ইনিংসে খেলা। এই খেলা কি হার-জিদের ? নাকি প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির ? এই উপন্যাসে তারই মরমী বিবরণ।
সমরেশ মজুমদার
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের জন্ম ১০ মার্চ ১৯৪৪।
তাঁর শৈশব এবং কৈশাের কেটেছে জলপাইগুড়ির ডুয়ার্সের চা বাগানে। লেখাপড়ায় মন বসতাে না একদমই। ইচ্ছে ছিল নায়ক হবেন। তাই জলপাইগুড়ির বন্ধুদের নিয়ে সাজাতেন নাটকের দল। বাজারের জন্য দিদিমার দেয়া টাকা বাঁচিয়ে তাও খরচ করতেন বন্ধুদের নিয়ে। ষােলাে বছরের এক তরুণ সমরেশ কলকাতায় আসেন ১৯৬০ সালে। ভর্তি হন স্কটিশ চার্চ কলেজে, বাংলায়। এখানেও শুরু হলাে থিয়েটার আর নাটক লেখা, গল্প লেখার কাজ। নাটক লিখলেও নাটক হতাে না। অভিনয়ও জমছে না ঠিকমতাে। ততদিনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ পাসের সার্টিফিকেট জুটলাে কপালে। কিন্তু নায়ক হওয়ার স্বপ্ন আর পূরণ হলাে না। এবার নাটক বাদ। গল্প লেখায় সময় ব্যয়। ১৯৭৬ সালে দেশ পত্রিকায় ছাপা হলাে তাঁর প্রথম উপন্যাস দৌড়। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। প্রকাশিত গ্রন্থ ২১৫।
সমরেশ মজুমদার ১৯৮২ সালে পান ‘আনন্দ পুরস্কার'। কালবেলা উপন্যাসের জন্য সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান ১৯৮৪ সালে।