ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছেন ইমদাদুল হক মিলন। কখনও তাঁর উপন্যাসের বিষয় হয়েছে একাত্তরের সেই ঘৃণিত স্বাধীনতা বিরোধীচক্র, রাজাকার। স্বাধীনতার বেশ কিছুকাল পর সাপের শীতনিন্দ্রা ভেঙ্গে জেগে ওঠার মতো যারা, বিষাক্ত ছোবলে জর্জরিত করতে শুরু করেছে আমাদের প্রিয়তম মাতৃভূমি। গ্রাম বাংলার সরল সাধারণ মানুষ অনুপ্রাণিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে, কোন মন্ত্রবলে গ্রাম্য বালক শান্তিবাহিনীর চেয়ারম্যানের হাতে প্রাণ দেয়, তবু হদিশ দেয় না মুক্তিযোদ্ধার! স্বাধীনতার প্রাকমুহূর্তে খুঁজে পাওয়া অবোধ শিশুটি আজ কি রকম ভাবে বেঁচে আছে। আর সেই গ্রাম্য চৌকিদার, যুদ্ধে যাবার সময় ছেলে যাঁর বলে গিয়েছিল, অপেক্ষায় থেকো, আমি ফিরে আসবো স্বাধীনতা নিয়ে।মহান পিতা অপেক্ষা করে আছেন। স্বাধীনতা এসেছে, ছেলেটি তাঁর ফিরে আসেনি।কেন কারও কারও মনে হয় স্বাধীনতা এক মুক্ত দুর্বিনীত কালো ঘোড়া, যে থাকে কেবলই ধরা ছোঁয়ার বাইরে!কেন স্বাধীনতার অনেককাল পর কোনও কোনও মুক্তিযোদ্ধার মনে হয় মুক্তিযুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি, আবার বুঝি অন্ত্র তুলে নিতে হয় হাতে, শুরু করতে হয় মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্ব! ইমদাদুল হক মিলনের ‘মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় উপন্যাস সমগ্র’এমন এক অনুসন্ধানী আলোর উৎস, যে আলোয় নানা রকমভাবে উদ্ভাশিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ।দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়েছে সেই আশ্চর্য সময়, উনিশশো একাত্তর।
ইমদাদুল হক মিলন
৮ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫ বিক্রমপুরে জন্ম। প্রথম গল্প। ‘বন্ধু’ ১৯৭৩। প্রথম উপন্যাস যাবজ্জীবন ১৯৭৬। বাংলাদেশে সাহিত্যের পাঠক সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা। তিন পর্বের দীর্ঘ উপন্যাস ‘নূরজাহান’ কালজয়ী সাহিত্য হিসেবে গণ্য। দেশ বিদেশে বহু পুরস্কারে সম্মানিত। বাংলা একাডেমি পুরস্কার ১৯৯২। তাকেশি কায়েকো মেমােরিয়াল এশিয়ান রাইটারস লেকচার সিরিজে বাংলা ভাষার একমাত্র লেখক হিসেবে অংশগ্রহণ ২০০৫। ভারতের আইআইপিএম সুরমা চৌধুরী স্মৃতি আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরস্কার ২০১২।