দ্বিজেন শর্মা বিরলপ্রজ এক উদ্ভিদবিজ্ঞানী। বাঙালির চেতনার দিগন্ত প্রসারিত করার ব্রত নিয়ে উদ্ভিদ ও বিজ্ঞানের নানা শাখা সম্পর্কে লিখে চলেছেন। প্রকৃতি ও বিজ্ঞান মানবজীবনের কল্যাণে যে কত অত্যাবশ্যকীয় তা প্রাধান্য বিস্তার করেছে তাঁর নির্বাচিত এই গ্রন্থে। সঙ্গে রয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রসঙ্গ ও সমাজতন্ত্রের আদর্শিক চেতনার অভিজ্ঞতা দ্বিজেন শর্মার জন্ম ১৯২৯ সালে সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা থানার শিমুলিয়া গ্রামে। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির বাংলাপিডিয়া প্রকল্পে জীববিদ্যার অনুবাদক সম্পাদক এবং বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ প্রকল্পের সভাপতি। বাংলা একাডেমি ও শিশু একাডেমীর পুরস্কার এবং বাংলা একাডেমির ফেলো। অনুবাদক ও লেখক। উদ্ভিদ সংগ্রহ, উদ্যান নির্মাণ, প্রকৃতি সংরক্ষণ ও পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।
দ্বিজেন শর্মা
দ্বিজেন শর্মার জন্ম ২৯ মে, ১৯২৯ বৃহত্তর সিলেট জেলার বড়লেখা থানার শিমুলিয়া গ্রামে। পিতা চন্দ্রকান্ত শর্মা, মা মগ্নময়ী দেবী। স্নাতকোত্তর পাঠ (উদ্ভিদবিদ্যা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে । শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু।। বরিশাল ব্রজমােহন কলেজ (১৯৫৮-৬২), ঢাকা নটর ডেম কলেজ (১৯৬২-৭৪), অতঃপর মস্কোর প্রগতি প্রকাশন সংস্থায় অনুবাদক (১৯৭৪-৯১)। কর্মসূত্রে অনুদিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ত্রিশ এবং নিজের লেখা চব্বিশ তন্মধ্যে অধিকাংশ বই প্রকৃতি, বিজ্ঞান ও শিক্ষা বিষয়ক । এগুলাের মধ্যে উল্লেখ্য : শ্যামলী নিসর্গ (১৯৮০), ফুলগুলি যেন কথা (১৯৮৮), মম দুঃখের সাধন (১৯৯৪), গাছের কথা ফুলের কথা (১৯৯৯), নিসর্গ নির্মাণ ও নান্দনিক। ভাবনা (২০০০), গহন কোন বনের ধারে (১৯৯৪), হিমালয়ের উদ্ভিদরাজ্যে ড্যালটন হুকার (২০০৪), বাংলার বৃক্ষ (২০০১), সপুষ্পক উদ্ভিদের শ্রেণীবিন্যাসতত্ত্ব (১৯৮০), জীবনের শেষ নেই (২০০০), বিজ্ঞান ও শিক্ষা : দায়বদ্ধতার নিরিখ (২০০৩), সতীর্থবলয়ে ডারউইন (১৯৯৯), ডারউইন ও প্রজাতির উৎপত্তি (১৯৯৭), কুরচি তােমার লাগি (২০০৭) এবং সােভিয়েত ইউনিয়নে দীর্ঘ বসবাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা সমাজতন্ত্রে বসবাস (১৯৯৯)। বাংলা একাডেমি ও শিশু একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদকসহ নানান সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। তিনি প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি, প্রকৃতি সুরক্ষা এবং নগর ও উদ্যান সৌন্দর্যায়নের এই নিরলস কর্মী আমাদের সংস্কৃতি অঙ্গণের এক বর্ণাঢ্য মানুষ।