মিসির আলী সিরিজের বই। "নিশীথিনী" হচ্ছে "দেবী" এর দ্বিতীয় পর্ব। রহস্য এবং আধিভৌতিক টাইপের বই। রাণুর মৃত্যুর পর নীলুর মধ্যে রানুর ছায়া পড়ে, নীলু রাণুর অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা বা ESP অর্জন করে। যে দেবী রানুর মধ্যে বাস করত সে নীলুর শরীরে ঢুকে পড়ে - যা মিশির আলীকে বিষ্মিত করে, কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেন না। তবে এ গল্প ফিরোজকে নিয়ে। ফিরোজ মোহনগঞ্জে তার বন্ধু আজমলের বাড়ী বেড়াতে গিয়ে অপ্রকৃতিস্থ হয়ে ফিরে আসে। কারণ অজ্ঞাত। হঠাৎ হঠাৎ সে হিংস্র হয়ে পড়ে। তার মাথায় খুন চেপে যায়। হিংস্র অবস্থায় তার কাছে একটি মানুষ আসে, তার সাথে কথা বলে। মিশির আলীর টেপ রেকর্ডারে তার আওয়াজও ধরা পড়ে। ফিরোজের সেকেন্ড পার্সোনালিটি - ছোট চৌধুরী। হানিফা মিশির আলীর বাড়ীর কাজের মেয়ে। এক রাত্রে জ্বরের ঘোরে সে ইংরাজীতে কথা বলে উঠলে মিশির আলী বুঝতে পারে সে বড় ঘরের মেয়ে। তিনি তার বন্ধু পুলিশ কমিশনার সাজ্জাদের সাহায্য চান। তিনি হানিফা আর ফিরোজ দুজনের ব্যাপারেই খোঁজ শুরু করেন। মিশির আলী ফিরোজের রহস্য উদ্ধারে মোহনগঞ্জে যান। আর এদিকে ফিরোজ একের পর এক হত্যাকান্ড ঘটাতে থাকে। নীলু বুঝতে পারে ফিরোজ এবার মিশির আলীকে হত্যা করবে। মিশির আলীকে কেন্দ্র করে নীলু আর ফিরোজ - এবার লড়াই তাদের মধ্যে; দেবী আর ছোট চৌধুরীর মধ্যে - যাদের অস্তিত্ব মিশীর আলীর কাছে নেই। সত্যিই কী নেই?
হুমায়ূন আহমেদ
কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ‘নন্দিত নরকের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। এই উপন্যাসে নিম্নমধ্যবিত্ত এক পরিবারের যাপিত জীবনের আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন, মর্মান্তিক ট্রাজেডি মূর্ত হয়ে উঠেছে। নগরজীবনের পটভূমিতেই তাঁর অধিকাংশ উপন্যাস রচিত। তবে গ্রামীণ জীবনের চিত্রও গভীর মমতায় তুলে ধরেছেন এই কথাশিল্পী। এর উজ্জ্বল উদাহরণ অচিনপুর ফেরা মধ্যাহ্ন মুক্তিযুদ্ধ বারবার তাঁর লেখায় ফুঠে উঠেছে। এই কথার উজ্জ্বল স্বাক্ষর জোছনা ও জননীর গল্প ১৯৭১ আগুনের পরশমণি শ্যামল ছায়া নির্বাসন প্রভৃতি। উপন্যাস গৌরীপুর জংশন যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ চাঁদের আলােয় কয়েকজন যুবক'-এ জীবন ও চারপাশকে দেখার ভিন্ন দৃষ্টিকোণ মূর্ত হয়ে উঠেছে ‘বাদশা নামদার’ ও ‘মাতাল হাওয়ায় । অতীত ও নিকট-অতীতের রাজরাজড়া ও সাধারণ মানুষের গল্প ইতিহাস থেকে উঠে এসেছে। গল্পকার হিসেবেও হুমায়ূন আহমেদ ভিন্ন দ্যুতিতে উদ্ভাসিত। ভ্রমণকাহিনি, রূপকথা, শিশুতােষ, কল্পবিজ্ঞান, আত্মজৈবনিক, কলামসহ সাহিত্যের বহু শাখায় তাঁর বিচরণ ও সিদ্ধি।
হুমায়ুন আহমেদের জন্ম ১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ এবং মৃত্যু ১৯ জুলাই ২০১২।