বই সম্পর্কেঃ প্রায় ত্রিশটির বেশি দেশ ঘুরে আসার পর আমার প্রায়ই মনে হয়ে, নিজেদের চেয়ে দরিদ্র দেশে ঘুরে বেড়াতে আরাম বেশি। কিন্তু নেপালের কথা আলাদা। নেপাল ঘুরে আসার পর মনে হলো, ধনী দেশের মধ্যে পড়লেও ওই দেশ আমার অনেক আগেই ভালো করে দেখা উচিত ছিলো।বলতে দ্বিধা নেই, সৃষ্টিকর্তা অনেক বাড়াবাড়ি রকমের সৌন্দর্য দিয়ে তাঁকে লালন করছেন। পাহাড়, মেঘ আর সবুজের এমন সৌন্দর্য পৃথিবীর খুব কম লোকালয়ে আছে। সুইজারল্যান্ড বা সালযবুর্গে যা আছে, নেপালে তার কমতি নেই কোনো অর্থেই। শুধু তাই নয়, মধ্যযুগের দালান নির্মাণে যে পরিমাণ কারুশিল্প তাঁরা সৃষ্টি করেছিলো, সেগুলোও আজকের যুগের এক বিস্ময়। ২০১৪ সালের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া একদল স্থপতির সঙ্গে প্রায় বাধ্য হয়ে ৮ রাতের সফরে গিয়েছিলাম নেপাল। সে দলের সঙ্গে ঘুরলাম পোখরা, নাগরকোট আর কাঠমান্ডু অঞ্চল। যে স্থাপত্য সম্মেলনের নামে আমার যাওয়া ছিলো, তার রেজিস্ট্রেশন ছিলো না আমার, সে কারণে দিনভর ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে বক্তৃতা শোনার সময়টা আমি কাটিয়েছি আমার ক্যামেরা যুগল নিয়ে। চোখ ভরে দেখেছি, কিছু মানুষের সঙ্গেও মিশেছি। সেসবের কাহিনি নিয়েই আমার এ ভ্রমণকথা অন্নপূর্ণায়। এ বইটিতে ব্যবহৃত ছবিগুলো বেশিরভাগই আমার তোলা, কিছু ছবি তুলেছে আমার সহ স্থপতি-পর্যটকেরা। কৃতজ্ঞতা তাঁদের প্রতিও। শাকুর মজিদ
শাকুর মজিদ
শাকুর মজিদের জন্ম সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা গ্রামে ১৯৬৫ সালের ২২ নভেম্বর । পিতা মরহুম আব্দুল মজিদ, মা বেগম ফরিদা খাতুন। ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিকে ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৯৩ সালে। শৈশবে কবিতা দিয়ে লেখালেখি শুরু। পরে গল্প, নাটক, ভ্রমণ-কাহিনি লিখেছেন অনেক। নাটকের সকল শাখায় তাঁর বিচরণ। লন্ডনী কইন্যা, নাইওরী, বৈরাতী, করিমুন নেছা, চেরাগসহ বেশ কয়েকটি টেলিভিশন-নাটক ও টেলিফিলাের রচয়িতা তিনি। বাউল শাহ আবদুল করিমের জীবন ও দর্শন নিয়ে লিখেছেন মঞ্চনাটক ‘মহাজনের নাও'। তাঁর জীবন নিয়ে বানিয়েছেন তথ্যচিত্র “ভাটির পুরুষ। এছাড়াও দেশ-বিদেশের ভ্রমণচিত্র নিয়ে তিন শতাধিক প্রামাণ্যচিত্র বানিয়েছেন। ছবি তুলে, নাটক টেলিফিল্ম ও তথ্যচিত্র বানিয়ে দেশে-বিদেশে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। দেশ ভ্রমণ তাঁর একটি বড় নেশা। প্রায় ত্রিশটি দেশ ভ্রমণ করেছেন। এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে ১৫টি ভ্রমণকাহিনি, ৪টি স্মৃতিচারণমূলক ও ১টি গল্পগ্রন্থ। মঞ্চনাটকের আলােকচিত্র নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম আলােকচিত্র-গ্রন্থ ‘রিদম অন দ্যা স্টেজ, স্থাপত্য বিষয়ক গ্রন্থ ‘মসজিদের ইতিকথা। ব্যক্তিজীবনে শাকুর মজিদ একজন পেশাদার স্থপতি এবং আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক। তাঁর স্ত্রী অধ্যাপক ড. হােসনে আরা জলী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান। দুই সন্তান—ইশমাম ইনতিসার (১৯) ও ইবন ইবতেশাম (১৩)।