ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ হোটেল গ্রেভার ইন মে ফ্লাওয়ার যশোহা বৃক্ষের দেশে দেখা না-দেখা রাবনের দেশে আমি ও আমরা
ভূমিকা ইংরেজীতে Travelogue বলে একটি শব্দ আছে যার অর্থ অবশ্যই ভ্রমণ কাহিণী না। ভ্রমণ-গল্প হতে পারে। আমি এই ধারায় বেশ কিছু লেখালেখি করেছি। লেখাগুলিকে একত্র করার নিজে তেমন প্রয়োজন অনুভব করিনি। অনন্যা’র মুনীর কি জন্যে করলেন তিনিই জানেন। আমার ব্যক্তিগত জীবনে স্পষ্ট দুই বিভাজন আছে। জীবনের শুরুর অংশে যে আমার সঙ্গিনী ছিল শেষের অংশে সে ছিল না। অন্য একজন এসেছে। আমি পরিবার-কেন্দ্রিক মানুষ বলেই দু’জনের কথাই আনন্দ নিয়ে অবপটে লিখেছি। পাঠকরা পড়তে গিয়ে ধাক্কার মত খান কি-না কে জানে। যাপিত জীবন আমার কাছে ট্রেভেলগের মত। ভ্রমণের সঙ্গী বদল হয়। দৃশ্যপট-যিনি ভ্রমন করেছেন তিনিও বদলান।
হুমায়ূন আহমেদ
কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ‘নন্দিত নরকের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। এই উপন্যাসে নিম্নমধ্যবিত্ত এক পরিবারের যাপিত জীবনের আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন, মর্মান্তিক ট্রাজেডি মূর্ত হয়ে উঠেছে। নগরজীবনের পটভূমিতেই তাঁর অধিকাংশ উপন্যাস রচিত। তবে গ্রামীণ জীবনের চিত্রও গভীর মমতায় তুলে ধরেছেন এই কথাশিল্পী। এর উজ্জ্বল উদাহরণ অচিনপুর ফেরা মধ্যাহ্ন মুক্তিযুদ্ধ বারবার তাঁর লেখায় ফুঠে উঠেছে। এই কথার উজ্জ্বল স্বাক্ষর জোছনা ও জননীর গল্প ১৯৭১ আগুনের পরশমণি শ্যামল ছায়া নির্বাসন প্রভৃতি। উপন্যাস গৌরীপুর জংশন যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ চাঁদের আলােয় কয়েকজন যুবক'-এ জীবন ও চারপাশকে দেখার ভিন্ন দৃষ্টিকোণ মূর্ত হয়ে উঠেছে ‘বাদশা নামদার’ ও ‘মাতাল হাওয়ায় । অতীত ও নিকট-অতীতের রাজরাজড়া ও সাধারণ মানুষের গল্প ইতিহাস থেকে উঠে এসেছে। গল্পকার হিসেবেও হুমায়ূন আহমেদ ভিন্ন দ্যুতিতে উদ্ভাসিত। ভ্রমণকাহিনি, রূপকথা, শিশুতােষ, কল্পবিজ্ঞান, আত্মজৈবনিক, কলামসহ সাহিত্যের বহু শাখায় তাঁর বিচরণ ও সিদ্ধি।
হুমায়ুন আহমেদের জন্ম ১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ এবং মৃত্যু ১৯ জুলাই ২০১২।