ধীরে ধীরে কখন একসময় যে চোখের পাতা দুটো আপনা হতেই বুজে এসেছিল। অনেকক্ষণ ধরে তীব্র যন্ত্রণায় যে অনুভূতিটা শরীরের বিশেষ একটি জায়গায় তীক্ষ ছুঁচ ফোটাচ্ছিল সেই অনুভূতিটা যে কখন একসময় ঝিমিয়ে এসেছিল যেন বুঝতেই পারে নি ইন্দ্রজিৎ। শুধু ছিল সমস্ত শরীর জুড়ে, মস্তিষ্কের সমস্ত স্নায়ুকোষে-কোষে একটা ক্লান্ত মধুর অবসন্নতার আবেশ। | চোখের পাতা বুজেই ছিল ইন্দ্রজিৎ। শুনতে পেল ভারী গলায় কাকে যেন কে নির্দেশ দিল, ঐ টেবিল ল্যাম্পটা-ঐটা জ্বেলে দিন সিস্টার।
নীহাররঞ্জন গুপ্ত
নীহাররঞ্জন গুপ্তের জন্ম অখণ্ড বাংলার যশাের জেলায় ১৯১২ সালের ৬ই জুন। কলকাতায় বড় হয়েছেন। পড়াশুনাের জন্য বাল্যবয়সেই কলকাতায় চলে আসেন। এখানেই কারমাইকেল মেডিক্যাল কলেজ (বর্তমান আর, জি. কর কলেজ) থেকে ডাক্তারি পাস করেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যােগ দিয়ে মেজর পর্যন্ত হয়েছিলেন। চট্টগ্রাম থেকে মিশর পর্যন্ত বিভিন্ন রণাঙ্গনে থেকেছেন। ব্রহ্মদেশেও অনেকটা সময় কাটিয়েছেন। যুদ্ধশেষে লন্ডনে গিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন চর্মরােগবিশেষজ্ঞ ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। জনপ্রিয় রহস্য-কাহিনীকার, বাংলা সাহিত্যে গােয়েন্দা-চরিত্র ‘কিরীটী রায়’-এর স্রষ্টা নীহাররঞ্জন বড়দের ও ছােটদের জন্য সব মিলিয়ে দুই শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। কলেজের ছাত্রাবস্থায় তার প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘রাজকুমার। সবুজ সাহিত্য’ নামে একটি ছােটদের পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। ‘কালােমর’ ছাড়াও তার অন্যান্য উল্লেখযােগ্য গ্রন্থের মধ্যে আছে ‘অস্তি ভাগীরথী তীরে, ‘তালপাতার পুঁথি’, ইতিহাস কথা বলে, ‘উল্কা’, ‘উত্তরফাল্গুনী’, ‘কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী’, ‘লালুভুলু’, ‘বাদশা’, রাতের রজনীগন্ধা’ প্রভৃতি।