২০১১ সালের এপ্রিল মাসে আমাদের পঞ্চপর্যটকের দল (স্থপতি কাজী এম. আরিফ, স্থপতি তরিকুল ইসলাম, এনায়েত কবীর, এম. সাঈদ হাসান এবং স্থপতি শাকুর মজিদ) তিন সপ্তাহের সফরে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের কয়েকটি দেশ সফর করি। সুইডেনের রাজধানী স্টকহোম দিয়ে শুরু হয়েছিল যাত্রা। তারপর পোলান্ডের কয়েকটি শহর ঘুরে আমরা যাই চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাচীন সভ্যতার নগরী রাজধানী শহর ‘প্রাগ’-এ। ‘প্রাগ’ যেন বিগত এক হাজার বছর ধরে চলমান বিশ্ব স্থাপত্যধারার এক উন্মুক্ত প্রদর্শণশালা। দুদিনের প্রাগ সফর আমাদেরকে বিমোহিত করে রাখে। সেখান থেকে আবার পোলান্ড হয়ে আমরা আসি সঙ্গীত ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আরেক অনুপম শহর সাল্জ্বুর্গে। অস্ট্রিয়ার এই জার্মান শহরটি তার বারোকরীতির স্থাপত্য, মোজার্ট, প্রাকৃতিক শোভা আর সাউন্ড অব মিউজিক দিয়ে আচ্ছন্ন করে রাখে আমাদের ৪টি রাত। ৩ সপ্তাহের এ সফর নিয়ে ইতোপূর্বে অবসর থেকে ‘লেস ওয়ালেসার দেশে’ এবং ‘অন্যপ্রকাশ’ থেকে বেরিয়েছিল ‘নোবেলের শহর’ নামে দুটো আলাদা ভ্রমণ কাহিনী। এবার প্রাগ আর সাল্জ্বুর্গকে একত্র করে প্রাগের ঠাকুরোভা লবণপুরের মোজার্ট প্রকাশ হলো।
শাকুর মজিদ
শাকুর মজিদের জন্ম সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা গ্রামে ১৯৬৫ সালের ২২ নভেম্বর । পিতা মরহুম আব্দুল মজিদ, মা বেগম ফরিদা খাতুন। ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিকে ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৯৩ সালে। শৈশবে কবিতা দিয়ে লেখালেখি শুরু। পরে গল্প, নাটক, ভ্রমণ-কাহিনি লিখেছেন অনেক। নাটকের সকল শাখায় তাঁর বিচরণ। লন্ডনী কইন্যা, নাইওরী, বৈরাতী, করিমুন নেছা, চেরাগসহ বেশ কয়েকটি টেলিভিশন-নাটক ও টেলিফিলাের রচয়িতা তিনি। বাউল শাহ আবদুল করিমের জীবন ও দর্শন নিয়ে লিখেছেন মঞ্চনাটক ‘মহাজনের নাও'। তাঁর জীবন নিয়ে বানিয়েছেন তথ্যচিত্র “ভাটির পুরুষ। এছাড়াও দেশ-বিদেশের ভ্রমণচিত্র নিয়ে তিন শতাধিক প্রামাণ্যচিত্র বানিয়েছেন। ছবি তুলে, নাটক টেলিফিল্ম ও তথ্যচিত্র বানিয়ে দেশে-বিদেশে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। দেশ ভ্রমণ তাঁর একটি বড় নেশা। প্রায় ত্রিশটি দেশ ভ্রমণ করেছেন। এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে ১৫টি ভ্রমণকাহিনি, ৪টি স্মৃতিচারণমূলক ও ১টি গল্পগ্রন্থ। মঞ্চনাটকের আলােকচিত্র নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম আলােকচিত্র-গ্রন্থ ‘রিদম অন দ্যা স্টেজ, স্থাপত্য বিষয়ক গ্রন্থ ‘মসজিদের ইতিকথা। ব্যক্তিজীবনে শাকুর মজিদ একজন পেশাদার স্থপতি এবং আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক। তাঁর স্ত্রী অধ্যাপক ড. হােসনে আরা জলী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান। দুই সন্তান—ইশমাম ইনতিসার (১৯) ও ইবন ইবতেশাম (১৩)।