ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ প্রেমের গল্প বলতে যা বুঝায় আমি সে রকম গল্প লিকতে পারি বলে মনে হয় না। একটা ছেলে একটা মেয়েকে বলছে “আমি তোমাকে ভালবাসি” এটা আমার কাছে খুবই হাস্যকর মনে হয়। তারপরেও এ ধরনের গল্প যে লিখিনি তা-না, তবে সেইসব গল্প অতিপ্রাকৃত ধরনের। পাথরের সঙ্গে প্রেম, মূর্তি বা ছায়ামূর্তির প্রতি গাঢ় অনুরাগের গল্প। পাঠক যখন প্রেমের গল্প পড়তে চান তখন মানব-মানবীর সম্পর্কের গল্পই পড়তে চান। কাজেই আমার গল্প পড়ে হয়তবা ভুড়ু কুচকাবেন। কি আর করা? আমি যা পেরেছি, তাই লিখেছি। যা পারি না, তা কি করে লিখব।
কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ‘নন্দিত নরকের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। এই উপন্যাসে নিম্নমধ্যবিত্ত এক পরিবারের যাপিত জীবনের আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন, মর্মান্তিক ট্রাজেডি মূর্ত হয়ে উঠেছে। নগরজীবনের পটভূমিতেই তাঁর অধিকাংশ উপন্যাস রচিত। তবে গ্রামীণ জীবনের চিত্রও গভীর মমতায় তুলে ধরেছেন এই কথাশিল্পী। এর উজ্জ্বল উদাহরণ অচিনপুর ফেরা মধ্যাহ্ন মুক্তিযুদ্ধ বারবার তাঁর লেখায় ফুঠে উঠেছে। এই কথার উজ্জ্বল স্বাক্ষর জোছনা ও জননীর গল্প ১৯৭১ আগুনের পরশমণি শ্যামল ছায়া নির্বাসন প্রভৃতি। উপন্যাস গৌরীপুর জংশন যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ চাঁদের আলােয় কয়েকজন যুবক'-এ জীবন ও চারপাশকে দেখার ভিন্ন দৃষ্টিকোণ মূর্ত হয়ে উঠেছে ‘বাদশা নামদার’ ও ‘মাতাল হাওয়ায় । অতীত ও নিকট-অতীতের রাজরাজড়া ও সাধারণ মানুষের গল্প ইতিহাস থেকে উঠে এসেছে। গল্পকার হিসেবেও হুমায়ূন আহমেদ ভিন্ন দ্যুতিতে উদ্ভাসিত। ভ্রমণকাহিনি, রূপকথা, শিশুতােষ, কল্পবিজ্ঞান, আত্মজৈবনিক, কলামসহ সাহিত্যের বহু শাখায় তাঁর বিচরণ ও সিদ্ধি।
হুমায়ুন আহমেদের জন্ম ১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ এবং মৃত্যু ১৯ জুলাই ২০১২।