‘রঙ্গশালা’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ বাঙালির সমাজ-রাজনীতি-ধর্মবোধ-দর্শন-সাহিত্য-জোচ্চুরি-ওপরচালাকি—এসবের রূপময় চিত্র আছে রঙ্গশালা উপন্যাসে। আর আছে আকুল করা রহস্যময় এক উপাখ্যান। মানুষের কীর্তি-কুকীর্তি, ভাবনা-যাতনা, কৈশোর-তারুণ্য-বার্ধক্য, জন্ম-বিয়ে-মৃত্যু, সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা সবই একাকার হয়ে গেছে এই উপন্যাসে। হরিশংকর জলদাসের নতুন ভাষাভঙ্গিরও প্রমাণ পাবেন পাঠক। উপন্যাসের কাহিনি-কথক একজন ভিক্ষুক। শ্রোতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক। বলার স্থান রমনা পার্ক। রঙ্গশালার কাহিনি এমন, পাঠক অধ্যাপকের পাশে বসতে বাধ্য হবেন ভিক্ষুকের মুখে গল্প শুনতে। রঙ্গশালায় হরিশংকর জলদাস বিস্তৃত বাঙালি-জীবন রচনায় মনোযোগী হয়েছেন।
হরিশংকর জলদাস
১৯৫৫'র ১২ অক্টোবর জন্ম, চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গার জেলেপল্লিতে। সাতচল্লিশ বছর বয়সে লিখতে বসা ঠেকায় পড়ে। লিখতে বসেছিলেন গবেষণাপত্র, লিখে ফেললেন ‘জলপুত্র’ উপন্যাসটি। জলপুত্র’ হরিশংকর জলদাসকে মর্যাদার আসনে বসিয়ে দিল। নতুনধারার নতুন রকম উপন্যাস পরের বছরে বের হলো 'দহনকাল’, ‘কসবি’, ‘রামগােলাম’, ‘হৃদয়নদী, ‘মােহনা’, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’, ‘আমি মৃণালিনী নই’, ‘এখন তুমি কেমন আছ', ‘একলব্য' উপন্যাসগুলাে। তার গল্পের বই-জলদাসীর গল্প’, ‘লুচ্চা’, ‘হরকিশােরবাবু “কোনাে এক চন্দ্রাবতী’, ‘মাকাললতা', 'বাছাই বারাে' ও ‘গল্পসমগ্র : ১' বাংলা একাডেমি থেকে বেরিয়েছে। তাঁর ডক্টরাল থিসিস ‘নদীভিত্তিক বাংলা উপন্যাস ও কৈবর্তজনজীবন অন্যান্য গদ্যগ্রন্থ-কৈবর্ত কথা’, ‘নিজের সঙ্গে দেখা’, ‘জীবনানন্দ ও তাঁর কাল’, ‘লােকবাদক বিনয়বাশী’, ‘বাংলা সাহিত্যের নানা অনুষঙ্গ। হরিশংকর জলদাস কাহিনী লিখেন না শুধু, সমাজকেও লিখেন। কথাসাহিত্যে ব্যতিক্রমী হাওয়া নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন তিনি। তার চরিত্ররা সমাজের প্রান্তজন- জেলে, বীরাঙ্গনা, মেথর, কোটনা, মুচি, খুনি সাহিত্যকর্মের জন্য পেয়েছেন ‘আলাওল সাহিত্য পুরস্কার' (জলপুত্র), ‘প্রথম আলাে বর্ষসেরা, বই পুরস্কার’ (দহনকাল), সিটি আনন্দ আলাে পুরস্কার’ ও ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার সম্মাননা পদক' (রামগােলাম), ব্র্যাকব্যাংক সমকাল সাহিত্য পুরস্কার (প্রতিদ্বন্দ্বী)। কথাসাহিত্যে সার্বিক অবদানের জন্য পেয়েছেন অবসর সাহিত্য পুরস্কার’, ‘ড. রশিদ আল ফারুকী সাহিত্য পুরস্কার।
কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার। পেয়েছেন ২০১২ সালে।