এদেশে শিল্প সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সুলতান এক কিংবদন্তি পুরুষ। উপন্যাসের চেয়েও রোমাঞ্চকর তাঁর জীবন। ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব, বিচিত্র জীবনযাপন এবং শিল্প-শৈলীর নির্ভুল স্বাতন্ত্র্যের জন্য তাঁকে নিয়ে অপার কৌতূহল, বিস্ময় এবং শ্রদ্ধাবোধ অসংখ্য জনের। সেই সুলতানকে নিয়ে এই উপন্যাস। জীবনীভিত্তিক হয়েও সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে লেখা উপন্যাসটি সাময়িকীতে প্রকাশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুধীজনের দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হয়। এর কাহিনি শিল্পী সুলতানকে নিয়ে আবর্তিত হলেও এতে ছয় দশকের ব্যাপ্তিতে চলমান ঘটনার বর্ণনা যেমন রয়েছে, তেমনি ব্যক্তি ও সমাজজীবনের আশা-আকাক্ষা এবং ইতিহাসের পতন ও অভ্যুদয়ের বন্ধুর গতিপথ অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সঙ্গে বিধৃত হয়েছে। এ ছাড়া কোনো শিল্পীর জীবদ্দশায় তাঁকে নিয়ে সম্পূর্ণ উপন্যাস লেখার প্রচেষ্টা সম্ভবত বাংলাদেশে এই প্রথম।
হাসনাত আবদুল হাই
হাসনাত আবদুল হাই-এর জন্ম ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বরে, কলকাতায়। পৈত্রিক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার সৈয়দাবাদ গ্রামে। স্কুল শিক্ষা কলকাতা, যশাের, ফরিদপুর শহরে । কলেজ শিক্ষা ঢাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন স্কুল অব ইকনােমিকস্ এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষা লাভের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা। ১৯৬৫ সালে সিভিল সার্ভিসে যােগদানের পর প্রাক্তন পাকিস্তান সরকার এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকারের অধীনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন এবং সচিব পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। হাসনাত আবদুল হাই ছাত্র জীবন থেকে সাহিত্যচর্চা শুরু করেন ১৯৫৮ সালে ছােটগল্প রচনার মাধ্যমে। ছােটগল্প, উপন্যাস, ভ্রমণ-কাহিনী, শিল্প ও সাহিত্য সমালােচনা এবং নাটক এই সব শাখায় স্বচ্ছন্দে বিচরণ করেছেন চার দশকের অধিককাল। বাংলা এবং ইংরেজিতে একটি কবিতার বই লিখেছেন জাপানে প্রবাস জীবনে। প্রকাশিত ছােটগল্প গ্রন্থের সংখ্যা পাঁচ, উপন্যাস পঁচিশ এবং ভ্রমণ-কাহিনী ছয়। সাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন অলক্ত পুরস্কার, মােহাম্মদ আকরম খাঁ পুরস্কার, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন পুরস্কার, বাংলা একাডেমী পুরস্কার এবং একুশে পদক।