ভূমিকা যে কোনো উদ্ভট বিষয়ে আমার আগ্রহ আছে। উদ্ভট মানেই তো রহস্যময়তা। দুইয়ের সঙ্গে দুই যোগ করলে চার হয়। সেই চারে কোনো রহস্য নেই।কিন্তু যখন চার হয় না, যখন অন্য কিছু হয় তখনই মনে হয় খেলাটা জমে ওঠে। ভিন্ন ধরনের সেই খেলা আমার দেখতে ভালো লাগে, আবার অংশ নিতেও ভালো লাগে। এই বইয়ে সাতটি গল্প আছে। কৌতূহলী পাঠক যদি গল্পগুলির শানে-নজুল জানতে চান তা হলে বিপদে পড়ে যাব। এইটুকু শুধু বলতে পারি-গল্পগুলি শূন্য থেকে বানানো নয়।কঠিন নিয়মে বাঁধা পৃথিবীতে নিয়মের বাইরেও অনেক কিছু হয়।মানুষ থাকলেই আলোতে মানুষের ছায়া পড়ে, আবার এমনও হয়-মানুষ নেই কিন্তু তার ছায়া আছে। ধরে নেয়া যাক, এই গ্রন্থের সাতটি গল্পই ছায়ার গল্প। গল্পগুলি আমার পছন্দের। গ্রন্থাকারে এই প্রথম প্রকাশিত হল। হুমায়ূন আহমেদ
সূচীপত্র ................. লিপি মৃত্যুগন্ধ সম্পর্ক শবযাত্রা নেডিকুকুর এবং আজহারউদ্দিন মণ্ডল প্রেসক্রিপশন অন্তরার বাবা
হুমায়ূন আহমেদ
কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ‘নন্দিত নরকের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। এই উপন্যাসে নিম্নমধ্যবিত্ত এক পরিবারের যাপিত জীবনের আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন, মর্মান্তিক ট্রাজেডি মূর্ত হয়ে উঠেছে। নগরজীবনের পটভূমিতেই তাঁর অধিকাংশ উপন্যাস রচিত। তবে গ্রামীণ জীবনের চিত্রও গভীর মমতায় তুলে ধরেছেন এই কথাশিল্পী। এর উজ্জ্বল উদাহরণ অচিনপুর ফেরা মধ্যাহ্ন মুক্তিযুদ্ধ বারবার তাঁর লেখায় ফুঠে উঠেছে। এই কথার উজ্জ্বল স্বাক্ষর জোছনা ও জননীর গল্প ১৯৭১ আগুনের পরশমণি শ্যামল ছায়া নির্বাসন প্রভৃতি। উপন্যাস গৌরীপুর জংশন যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ চাঁদের আলােয় কয়েকজন যুবক'-এ জীবন ও চারপাশকে দেখার ভিন্ন দৃষ্টিকোণ মূর্ত হয়ে উঠেছে ‘বাদশা নামদার’ ও ‘মাতাল হাওয়ায় । অতীত ও নিকট-অতীতের রাজরাজড়া ও সাধারণ মানুষের গল্প ইতিহাস থেকে উঠে এসেছে। গল্পকার হিসেবেও হুমায়ূন আহমেদ ভিন্ন দ্যুতিতে উদ্ভাসিত। ভ্রমণকাহিনি, রূপকথা, শিশুতােষ, কল্পবিজ্ঞান, আত্মজৈবনিক, কলামসহ সাহিত্যের বহু শাখায় তাঁর বিচরণ ও সিদ্ধি।
হুমায়ুন আহমেদের জন্ম ১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ এবং মৃত্যু ১৯ জুলাই ২০১২।