ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ পৃথিবীর কতো জায়গায় ঘুরেছি কিন্তু ক’মাস পরে লিখতে বসে স্মৃতি হাতড়ে আর তেমন কিছুই খুঁজে পাই না। হতে পারে বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্মরণশক্তি বোধহয় থিতু হয়ে আসে। আমার যদি হাতির মতো বড় মগজ থাকত তবে হয়তো কোনোকিছু্ই ভুলতাম না । হাতির মনে রাখার কোনো বিষয় নেই তবু ঈশ্বর কেন তাকে এত বড় মস্তিষ্ক দিয়েছেন তার সদুত্তর আমি খুঁজে পাই না। ঠিকমোত সবকিছু মনে রাখতে পারি না বলেই এখন কোনো আকর্ষণীয় স্খথান গেলে সাথে নোটবুক নিয়ে যাই। কালি-কলম দিয়ে টুকে রাখি স্থান-কাল-পাত্রসহ ভ্রমণের যাবতীয় প্রধান বিষয়।
একটা আকর্ষনীয় জায়গা ঘুরে এসে দু’এক বছর পর নোট বুক খুলে যখন তার ওপর লিখতে বসি তখন মনে হয়, এই বুঝি গতকালই ঐ জায়গাটায় আমরা বেরিয়ে এলাম । এ ধরণের অনুভূতি থেকেই আমার ভ্রমণকাহিনী লেখা শুরু। যা দেখে এসেছি তাই লিখি। চোখ বুজে অনুভব করে লিভি, বানিয়ে লিখি না কিছু। মনগড়া কিছু লিখলে তা তো আর ভ্রমণবৃত্তান্ত হবে না, রচিত হবে অন্য কিছু। আমার বিশ্বাস এসব ভ্রমণকাহিনী পপাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হবে। এ বিশ্বাস শুধু আমার নয়, এটা পৃথিবীর তাবৎ লেখকদেরই ধারণা।
সব লেখকের মনেই খুব সম্ভবত একটা ভুল ধারণা খাকে ,লেখকরা ভাবে তার লেখা পাঠকরা প্রবল উৎসাহে পড়বে। কিনউত তাই কি কখনো হয়? A Writer has a great imagination -he imagines people will read his writings. এই সুপ্ত অভিলাষ আমারও। আমার এই ভ্রমণবৃত্তান্ত মানুষ পড়বে এই ধারণা থেকেই আমার এ সব লেখা।
-বরেন চক্রবর্তী
সূচিপত্র * স্কটল্যান্ডের রাইজিং ভেনাসের মুখোমুখি * ওয়াশিংটনের আগ্নেয়গিরি মাউন্ট রেইনার একদিন * চালর্জ ডিকেন্সের বাড়িতে একদিন * নায়াগ্রার বরফগলা জল ও কনাডার সি এন টাউয়ার * অরিগনের ক্যানন বীচে এক সকাল * প্যারিসের ল্যুভর মিউজিয়ামে একদিন * ভারতের গোয়া -যে শহরে কোন কিছুতেই নেই মানা * থাইল্যাণ্ডের রাজাজাগা শহর পাটায় পুখেত * হাওয়াই দ্বীপের পার্ল হারবার * চীনের গ্রেট ওয়াল : কাছ থেকে দেখা * আয়ারল্যান্ডের জেমস জয়েস সেন্টার * সিংগাপুরের ফ্যান্টাসী দ্বীপ সেন্টোসা * ব্রিটিশ মিউজিয়াম : পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সংগ্রহশালা * লন্ডনের মাদাম তুঁসো * হংকং ওশান পার্ক- স্বপ্নের বেলাভূমি * স্বপ্নের দেশ ম্যাকাও * নেপালের অন্নপূর্ণার চূড়া পাহাড় : কাছ থেকে দেখা * ডাবলিনের রাইটার্স মিউজিয়াম * দ্বীপ শহর জাকার্তা * মালয়েশিয়ার পাহাগ স্বর্গ-জেনেটিং হাইল্যান্ড
আনিসুল হক
আনিসুল হক ৪ মার্চ ১৯৬৫ সালে রংপুরের নীলফামারীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রংপুর পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়, রংপুর জিলা স্কুল, রংপুর কারমাইকেল কলেজ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। ছাত্রাবস্থা থেকেই সাহিত্য ও সাংবাদিকতার প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল, এবং তিনি বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে প্রকৌশলী হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দিলেও ১৫ দিনের মধ্যে সাংবাদিকতায় ফিরে আসেন। বর্তমানে তিনি একটি প্রথম শ্রেণির জাতীয় দৈনিকে সহযোগী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত। সাহিত্যে তাঁর অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, সিটি আনন্দ-আলো পুরস্কার, খালেকদাদ চৌধুরী পদক, সুকান্ত পদক, এবং ইউরো সাহিত্য পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননা লাভ করেছেন।