ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের অসংখ্য ঘটনা নিয়ে গল্প লিখেছেন দেশের গল্পকাররা। তােমাদের জন্য গল্প। গল্পগুলাে পড়লে তােমরা বুঝতে পারবে সে সময় কি কঠিনভাবে আমরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। যুদ্ধ একটি জাতির জীবনে দুটি দিক ফুটিয়ে তােলে। একদিকে থাকে তার সাহসের কথা, লড়াকু মানুষের গৌরবের কথা। অন্যদিকে থাকে স্বজন হারানাের বেদনা কথা। এই বেদনা নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষেরা স্বাধীনতার মূল্য বােঝে মর্মে মর্মে। সাহস আর চোখের জলে সেই বীরগাথা তৈরি হয় সেটাই যুদ্ধের গল্প । এই বইয়ের প্রতিটি গল্প পড়ে স্বাধীন দেশের জন্য তােমাদের অনুভব গাঢ় হবে। দেখবে ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার জন্য মানুষ জীবনবাজি রেখে কীভাবে লড়াই করেছিল। কেমন করে ছােটরা বাবাকে হারিয়েছিল, মাকে হারিয়েছিল। আবার ছােটরা নিজেরাও যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল ।
খালেক বিন জয়েনউদ্দীন
বাংলাদেশের সাহিত্যাঙ্গনে খালেক বিন জয়েনউদদীন সুপরিচিত নাম। শিশুতােষ রচনা এবং বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রবন্ধ লিখে তিনি যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছেন। পঞ্চাশ বছর ধরে তিনি সাহিত্যচর্চা করছেন। তাঁর রচিত ধানসুপারি পানসুপারি, আতাগাছে তােতাপাখি, আপিল চাপিল ঘণ্টিমালা, জলকন্যে ঘাঘাের নদী, বকুলবনে জোছনাপরি, মউঝুরঝুর পুবাল হাওয়া, রােকনুজ্জামান খান দাদাভাই, একাত্তরের অশােক, নলিনীকান্ত ভট্টশালী, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের গণহত্যা, হস্তাক্ষরে শামসুর রাহমানের ছড়া-কবিতা ও পালকি চলে গগনতলে বইগুলাে পাঠকমহলে বিপুলভাবে সমাদৃত হয়েছে। খালেক বিন জয়েনউদদীন ১৯৫৪ সালের ২৪শে জানুয়ারি গােপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলাধীন চিত্রাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশােনা করেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ।। তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স নিয়ে ১৯৭৫ সালে এমএ পাশ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এবং যুদ্ধকালে যশােরের বারােবাজারে ধৃত হয়ে পাকিস্তানি সেনা ছাউনিতে অকথ্য নির্যাতন ভােগ করেন এবং সাতমাস বন্দী থাকেন। পঁচাত্তরের পর তিনি ছড়া লিখে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রথম প্রতিবাদ করেন, যা নি.গুণ ও বাংলার বিবেক আবুল ফজলের সাথে মাসিক সমকালে প্রকাশিত হয়।
সাহিত্যেচর্চার জন্য তিনি বঙ্গবন্ধু সাহিত্য পরিষদ, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ, অগ্রণী ব্যাংক, তরিকত মিশন, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ স্মৃতি পরিষদ, কোটালীপাড়া গুণীজন সংবর্ধনা পরিষদ ও বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেছেন।