দিবাকর আর সন্দীপন। একজনের ষাট, অন্যজনের বারো। একজন জানাতে চায়, অন্যজন জানতে আগ্রহী। জলধি গাঁ, এর মানুষজন, নদী-সাগর, নরেন মাস্টারমশাই, সুধাকর সান্যাল, নেপাল চক্কোত্তি, মোবারক মিয়া, গির্জা—এসবের কথা, এঁদের কথা এই উপন্যাসে ঘুরেফিরে আসে। উপস্থিত হয় রডরিকস নামের জলদস্যু। তার সুবাদে মিডোজ টেইলর। তাদের সঙ্গে ভাস্কো দা গামা এবং চার শ বছরের পুরোনো বেহালা। হঠাৎ মোবারক মিয়া খুন হয়ে যায়। গ্রামের সহজ-সরল মানুষ মোবারক। তাকে খুন করল কে? এই খুনের সঙ্গে ভাস্কো দা গামার বেহালার সম্পর্ক কী? গির্জা থেকে বেহালাটি চুরি করল কে? নাটের গুরু কে—শুভংকর স্যানিয়েল না ধরণী দত্ত? না মোবারক মিয়ার পরিবারের কেউ? এই খুনের কিনারা করবেন কে? দিবাকর সান্যাল? পারবেন কি তিনি খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করতে? টান টান উত্তেজনা। উপন্যাসের শেষ অধ্যায়ে না পৌঁছা পর্যন্ত পাঠক উদ্গ্রীব থাকবেন। হরিশংকর জলদাস প্রথমবার রহস্য উপন্যাস লিখলেন, কিশোর-কিশোরীদের জন্য
হরিশংকর জলদাস
১৯৫৫'র ১২ অক্টোবর জন্ম, চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গার জেলেপল্লিতে। সাতচল্লিশ বছর বয়সে লিখতে বসা ঠেকায় পড়ে। লিখতে বসেছিলেন গবেষণাপত্র, লিখে ফেললেন ‘জলপুত্র’ উপন্যাসটি। জলপুত্র’ হরিশংকর জলদাসকে মর্যাদার আসনে বসিয়ে দিল। নতুনধারার নতুন রকম উপন্যাস পরের বছরে বের হলো 'দহনকাল’, ‘কসবি’, ‘রামগােলাম’, ‘হৃদয়নদী, ‘মােহনা’, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’, ‘আমি মৃণালিনী নই’, ‘এখন তুমি কেমন আছ', ‘একলব্য' উপন্যাসগুলাে। তার গল্পের বই-জলদাসীর গল্প’, ‘লুচ্চা’, ‘হরকিশােরবাবু “কোনাে এক চন্দ্রাবতী’, ‘মাকাললতা', 'বাছাই বারাে' ও ‘গল্পসমগ্র : ১' বাংলা একাডেমি থেকে বেরিয়েছে। তাঁর ডক্টরাল থিসিস ‘নদীভিত্তিক বাংলা উপন্যাস ও কৈবর্তজনজীবন অন্যান্য গদ্যগ্রন্থ-কৈবর্ত কথা’, ‘নিজের সঙ্গে দেখা’, ‘জীবনানন্দ ও তাঁর কাল’, ‘লােকবাদক বিনয়বাশী’, ‘বাংলা সাহিত্যের নানা অনুষঙ্গ। হরিশংকর জলদাস কাহিনী লিখেন না শুধু, সমাজকেও লিখেন। কথাসাহিত্যে ব্যতিক্রমী হাওয়া নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন তিনি। তার চরিত্ররা সমাজের প্রান্তজন- জেলে, বীরাঙ্গনা, মেথর, কোটনা, মুচি, খুনি সাহিত্যকর্মের জন্য পেয়েছেন ‘আলাওল সাহিত্য পুরস্কার' (জলপুত্র), ‘প্রথম আলাে বর্ষসেরা, বই পুরস্কার’ (দহনকাল), সিটি আনন্দ আলাে পুরস্কার’ ও ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার সম্মাননা পদক' (রামগােলাম), ব্র্যাকব্যাংক সমকাল সাহিত্য পুরস্কার (প্রতিদ্বন্দ্বী)। কথাসাহিত্যে সার্বিক অবদানের জন্য পেয়েছেন অবসর সাহিত্য পুরস্কার’, ‘ড. রশিদ আল ফারুকী সাহিত্য পুরস্কার।
কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার। পেয়েছেন ২০১২ সালে।