বাংলাদেশে আগামী প্রজন্মের কৃষি পাঠক, কয়েক বছর আগ থেকেই ইউরােপ, আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়ার বিভিন্ন দেশের হাইটেক বা আধুনিক কৃষি, গ্রিন হাউজ কৃষি, সােজা কথায় অঙ্কের কৃষি সম্প্রসারণ সম্পর্কে টেলিভিশনে বিভিন্ন প্রতিবেদন তুলে ধরেছি। কৃষি এখন আর বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে থাকবে না, কৃষি চলে যাবে ঘরের ভেতর। এর সম্প্রসারণ ঘটবে উপরের দিকে, যাকে আমরা কেতাবি ভাষায় বলি, ভার্টিকাল এক্সপানশন। অর্থাৎ উধ্বমুখী কৃষি তেমন মাটির দরকার নেই, সেভাবে বেশি পানির দরকার নেই- সয়েললেস (মাটিবিহীন) এগ্রিকালচার বা ড্রিপ-ওয়াটার এগ্রিকালচারও বলা হয়ে থাকে। ভেতরে ভেতরে অনুভব করছি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সাম্প্রতিক সময়ে এই ধরনের কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। যিনি আগে গার্মেন্টস কিংবা টেক্সটাইলের মালিক ছিলেন তিনি আস্তে আস্তে কৃষিতে বিনিয়ােগ শুরু করেছেন। কৃষিতে বিনিয়ােগ কমে যাচ্ছিল। সাধারণ কৃষকরাই কৃষিতে বিনিয়ােগ করত। তবে তাদের পক্ষে হাইটেক এগ্রিকালচারে বিশাল বিনিয়ােগ করা সম্ভব না।
আজ আপনাদের বলব গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের ফাউগান গ্রামের সাখাওয়াত হােসেনের আধুনিক কৃষির গল্প। সাখাওয়াত হােসেন একজন ব্যবসায়ী। বহুবছর আগে তিনি ফাউগানে বেশকিছু জমি কিনেছিলেন চাষাবাদ করবেন বলে। এখন এখানে গড়ে তুলেছেন আধুনিক কৃষিচর্চার এক ক্ষেত্র।
শাইখ সিরাজ
কৃষি সাংবাদিকতায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় পুরস্কার জাতিসংঘের এ এইচ বুর্মা অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের জন্ম চাঁদপুরে, ১৯৫৬ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ভূগােলে। ছাত্রজীবনেই সম্পৃক্ত হন গণমাধ্যমের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে। টেলিভিশন জীবন শুরু করেন সত্তরের দশকের শেষ ভাগে। ১৯৮২ সাল থেকে একটানা ১৪ বছর পরিকল্পনা ও উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠান মাটি ও মানুষ। ১৯৯৫ সালে ৩৯ বছর বয়সে উন্নয়ন সাংবাদিকতার জন্য পান সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার একুশে পদক’ । ১৯৯৬ সালে তিনি অন্যতম অংশীদার হিসেবে দেশের সবচেয়ে বড় অডিও ভিজুয়াল সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৯ সালে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল আই প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ২০০৪ সাল থেকে চ্যানেল আইয়ে শুরু করেন কৃষি ও কৃষকের জন্য গণমাধ্যম কার্যক্রম হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ এবং ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষের ডাক’ । ২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে তার উপস্থাপিত ও পরিচালিত অনুষ্ঠান কৃষি দিবানিশি শুরু হয়। একইসঙ্গে তিনি মুদ্রণমাধ্যমেও কৃষি সাংবাদিকতা অব্যাহত রেখেছেন। নব্বইয়ের দশক থেকেই দেশের পত্রপত্রিকা ও জার্নালে অবিরাম লিখে চলেছেন কৃষি ও গণমাধ্যমবিষয়ক নিবন্ধ। জাতীয় পর্যায়ে এ পর্যন্ত পুরস্কার পেয়েছেন অর্ধশতাধিক। এ ছাড়াও তিনি অনেক আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অশােকা ফাউন্ডেশনের তিনি একজন ফেলাে দেশের প্রথম ডিজিটাল স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের তিনি পরিচালক ও বার্তাপ্রধান। শাইখ সিরাজ কৃষি ও গণমাধ্যম বিষয়ে ১০টিরও বেশি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর জীবন, কর্ম ও অবদান বিষয়ে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের অর্ধশতাধিক খ্যাতিমান লেখকের লেখা নিবন্ধ নিয়ে 'সান অব দ্য সয়েল’ নামের সংকলন। কৃষি সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে তিনি স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন।