ইমোশনাল মার্কেটিং (হার্ডকভার)
বইটি পড়লাম, ভালো লেগেছে। প্রিন্ট, কাগজ, কভারের মান ভালো।
অনেকদিন বই পড়া আর রিভিউ ও লেখা হয় না। এই কোয়ারেন্টিনের সময়টায় বই পড়ার চেয়ে উপযুক্ত সময় আর হয় না। তাই এই বইটা সম্প্রতি পড়ে শেষ করলাম। এই বইটা সম্পর্কে একটি কথা বলি, যারা মার্কেটিং নিয়ে পড়াশোনা করছেন না তারাও এটি পড়ে বেশ মজা পাবেন কারণ বইটিতে বিভিন্ন ইন্টারেস্টিং ঘটনার বর্ণনা, দারুণ কিছু বিজ্ঞাপনের লিংক দেয়া আছে।।।। লেখক বইটিকে ৪টি পর্বে বিভক্ত করেছেন। ১ম পর্বে মূলত প্রধান আলোচনা গুলো রয়েছে। এই অংশে, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন গুলো সম্পর্কে বলা হয়েছে। যেমনঃ হালাল সাবান, হিজাব রিফ্রেশ শ্যাম্পুর কথা। এছাড়াও টাইটান ঘড়ির 'Joy of Gifting' টাইটেলের একটি বিজ্ঞাপন যেখানে একজন শিক্ষককে অভিনব পদ্ধতিতে ঘড়ি গিফট করার কথা। তাছাড়াও বাটা কোম্পানির এনিমেশন টাইপ বিজ্ঞাপনের কথা, "হাটি হাটি পায়ে পায়ে দেখোনা" যেটি ওইসময় word of mouth এ পরিণত হয়েছিল যা অন্যকথায় Buzz Marketing ও বলা যায়। ২য় পর্বে রয়েছে ইমোজির আলোচনা। যদিও এই চাপ্টার টা পড়ার সময় অতটা আগ্রহ খুজে পাইনি। কারণ এ প্রজন্মের কাছে ইমুজি নতুন কিছু নয় কারণ ওরা প্রতিনিয়ত এটার ব্যবহার করছে। এটাতে এভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে যে, আমি অপেক্ষা করতে পারব না আমি অপেক্ষা করতে পারব না। এই ২টা বাক্য পড়ার সময় দুইরকম অনুভূতি প্রকাশ পায়। এখানে এছাড়াও ইমেইলেও ইমুজি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে যা কিছুটা খটকা লেগেছে কারণ আমি যতদুর জানতাম, ইমেইলে ইমুজি ব্যবহার করতে হয় না। যাইহোক, ৩য় পর্বে রয়েছে ৪টা কেইস স্টাডির কথা। ১মটি হলো, কোক এর, I'd like to buy the world a coke এই গানটি কতটা প্রভাব ফেলেছিলো। ২য়টি হলো, শেভ ক্লাবের একটি বিজ্ঞাপনের কথা এবং এটির প্রভাব। ৩য়টি হলো, Jetwest এর 'Crismass Miracle' নামক একটি ক্যাম্পেইনের কথা যেটি গ্রাহকের মধ্যে অভুতপূর্ণ সাড়া জাগিয়েছিলো। এবং সর্বশেষ টি হলো, বাংলাদেশের ক্রাউন সিমেন্টের যেখানে ছিলো, ইউর কান্ট্রি, মাই সিমেন্ট স্যার। যা প্রবাসীদের নিজ দেশের প্রতি আবেগ অনুভূতি গুলো প্রকাশ করেছিলো। ৪র্থ বা সর্বশেষ পর্বে রয়েছে, ফেসবুকে মার্কেটিং এর কথা। প্রথমেই পেইজে পেইড প্রমোশনে না গিয়ে নিজেদের নেটওয়ার্কের মধ্যে সেটি ছড়িয়ে দেয়া এমনভাবে যেন সেটি মার্কেটিং এর উদ্যেশ্য করা হচ্ছে সেটি যেন বোঝা না যায়।। সর্বোপরি, ভালোই লেগেছে... অন্তত রিডার্স ব্লক থেকে কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করেছে!!
ইমোশনাল মার্কেটিং।।। ।। 'প্রচলিত পন্থায় কাজ হচ্ছনা'-অনেক ব্র্যান্ড কাস্টোডিয়ানদের মতামত। প্রযুক্তি, স্মার্টফোন আর সোশ্যাল নেটওয়ার্কের এই যুগে ক্রেতা এখন নানাভাগে বিভক্ত, নানাভাবে তারা শিক্ষিত। সময় এখন টেকনোলজির সাথে পার্সোনাকে মেশানোর। আর কাস্টমারকে বুঝতে পারার জন্যে তার অনুভূতি বোঝা দরকার, তার আগ্রহ বোঝা দরকার, তার সফট কর্নার এবং বিরক্তির কারণ খুঁজে পাওয়া দরকার। প্রশ্ন হচ্ছে এই ইমোশন মার্কেটিং-টা আসলে কি কোন কাজে লাগে? এটা নিয়ে কি কোন কিছু করা যায়? এটা নিয়ে কি আগানোর কোন সুযোগ আছে? গ্রোথ হ্যাকিং মার্কেটিং লিখতে গিয়ে আমি যে জিনিসটা খেয়াল করেছি সেটা হচ্ছে যে বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে ইন্টারনেট বিকাশের ফলে এখন কিন্তু মার্কেটিংয়ে একটা ব্যাপক ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। ডিজিটাল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এইসব কিছু বিষয় কিন্তু পুরানো ধ্যানধারণাকে পাল্টে ফেলছে। আপনি যদি এই বিষয়টাকে খেয়াল না করেন তাহলে কিন্তু আপনি হেরে যাবেন। বাংলাদেশে এমন কোন পত্রিকা নেই যেটির মাধ্যমে আপনি দুই কোটি লোকের কাছে পৌছাতে পারবেন। কিন্তু ফেসবুকের মাধ্যমে কোন বুদ্ধি খাটালে আপনি নিশ্চয় দুই কোটি লোকের কাছে যেতে পারবেন। কারণ বাংলাদেশে এখন প্রায় সাড়ে তিন কোটি লোক ফেসবুক ব্যাবহার করে। প্রশ্ন হচ্ছে তাদেরকে ব্যাবহার করার জন্য যদি আবেগকে ব্যবহার করা যায়, তাদের মধ্যে যদি কোন রকমের আবেগীয় বিষয়কে ঢুকিয়ে দেয়া যায় তাহলে প্রচারণাটা খুব ভালো হয়। তাই বইটি প্রফেশনাল জীবনে খুব কাযকরি হবে এবং জীবন উন্নতির পথে এটি খুব সহায়ক হবে।।।
ব্যবসা এবং মার্কেটিং এর সাথে জড়িত প্রতিটি মানুষকে ইমোশনাল মার্কেটিং বইটি অনেক সাহায্য করবে। কাস্টমারের আবেগ বোঝা এবং সেই আবেগকে কাজে লাগানো যে কতোটা জরুরি তা বইটির লেখক মুনির হাসান চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন। ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপারেও জানা যাবে এই বই থেকে।
যারা বিবিএ পড়েছেন তাদেরজন্যএকটা সুনদর বই।যারা বিজনেস করতে চাচ্ছেন তাদেরজন্য এটা অনেক সাহায্য করবে। বইটি ভাল