ইন দ্য হ্যান্ড অব তালেবান
ইন দ্য হ্যান্ড অব তালেবান বইটি এমন একটা বই যেখানে একজন বিধর্মী পশ্চিমা সাংবাদিক। যিনি আফগান এবং মার্কিনিদের সাথে চাপিয়ে দেয়া যুব্দের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সত্যিকারের শান্তির খোঁজ পান আর তা ইসলাম থেকে তিনি পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং পশ্চিমা বিশ্বে আলোড়ন তুলেন ইসলামের আসল বানী, ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব,ইতিহাস এবং শান্তির কথা তুলে ধরনের। মুসলমানদের উপর অপবাদ এবং ষড়যন্ত্রের যে জাল পশ্চিমারা তাদের মুখোশ খুলে দেন।
বিশ্বব্যপী জঙ্গী সংগঠন হিসেবে পরিচিত তালেবান নয় এগারো’র হামলার পর আমেরিকানদের চোখে আরোও বেশী ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়। মূলতঃ তালেবান আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের ঘোর বিরোধী। অনেকে বলে থাকে তালেবান আমেরিকার মদদেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে এবং রাশিয়াকে দমনে আমেরিকাকে সহযোগীতা করেছে। পরবর্তীতে স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়েছে নিজেদের মধ্যে। তবে এসকল আলোচনা সমালোচনাকে এক পাশে রেখে তালেবান এক সময় হয়ে উঠেছিলো মুসলমানদের প্রতি অত্যাচারের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী মহীরুহ। নয় এগারোর হামলার পর তৎকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বুশ একরকম ক্রুসেড ঘোষণা করে বসেন গোটা মুসলিম জাতির বিরুদ্ধে। মূলতঃ সেই প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করেই আমেরিকান একজন সাংবাদিক ইভন রিডলির আত্মগল্প রচিত হয়েছে “ইন দ্য হ্যান্ড অব তালেবান” গ্রন্থটিতে। ইভন রিডলি লন্ডনভিত্তিক একটি বিখ্যাত দৈনিকের বিখ্যাত সাংবাদিক। নয় এগারোর হামলা পরবর্তী সময়ে তিনি তালেবান কার্যক্রমের খবর সংগ্রহের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হোন।। সেই দায়িত্বের জেরে ইভন রিডলির পাকিস্তান, আফগানিস্তান অভিযান এবং খবর সংগ্রহের বিভিন্ন লোমহর্ষক ঘটনার মধ্য দিয়ে গেছে গ্রন্থটির কাহিনী। একসময় ইভন রিডলি তালেবানদের আস্তানায় আটকা পড়ে যান। দশ দিন বন্দীদশায় থাকার পর মুক্তি পেয়ে কোরআন পড়বেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন তালেবান যোদ্ধাদের। ইভন রিডলির জীবনের সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক এটিই। মুক্তির পর তিন বছর ধরে কোরআনের গভীর থেকে গভীর অধ্যয়ন, ইসলাম সম্পর্কে জানার আগ্রহ থেকে ২০০৩ সালে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। পুরো বিশ্বে পরিচিত বিখ্যাত সাংবাদিক ইভন রিডলির এহেন পরিবর্তনে আরেকবার নতুন করে ভাবিয়ে তোলে বিশ্ববাসীকে। পরবর্তীতে তিনি ইসলামের একজন দায়ী রূপে আবর্তিত হোন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে তিনি ইসলামের সুমহান আদর্শের কথা, ইসলামে নারী অধিকারের কথা প্রচার করতে থাকেন। আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের ঘোর বিরোধীতা শুরু করেন তিনি। ইজরায়েলকে আখ্যা দেন আমেরিকার প্রিশিক্ষিত কুকুর হিসেবে। একসময়ের ঘোর নারীবাদী, মদ্যপ আর একাধিক সম্পর্ক স্থাপনকারী প্রায় নাস্তিক একজন মহিলা কি করে ইসলামের সুমহান ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছেন, তালেবানদের সাথে তার কিরকম যোগাযোগ ঘটেছিলো, তাঁরই শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনা নিয়ে আত্মজীবনী ধাঁচের কলেবরে রচিত হয়েছে “ইন দ্য হ্যান্ড অব তালেবান”। যেকোনো শ্রেণীর পাঠকদের কাছেই এটি একটি সুখপাঠ্য বই হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আমি মনে করি। চলুন ঘুরে আসা যাক ইভন রিডলির হাত ধরে খাইবার পাস হয়ে এক অন্যরকম জগতে।
বই - ইন দ্য হ্যান্ড অব তালেবান মূল: ইভন রিডলি অনুবাদ: আবরার হামীম। ২০০১ সালে নাইন ইলেভের পরবর্তী সময়। টুইনটাওয়ার হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সন্দেহের দৃষ্টি তাক করে ওসামা বিন লাদেন তথা তালেবানের দিকে। বিশ্ব মিডিয়ার দৃষ্টি তখন আফগানিস্তানে। ইভন তখন লন্ডন ভিত্তিক নিউজ এক্সপ্রেস পত্রিকার রিপোর্টার৷ সংবাদ সংগ্রহে আসেন পাকিস্তানে। খাইবার পাক সীমান্ত দিয়ে বোরখা পরে ছদ্মবেশে আফগানিস্তানে প্রবেশ করেন ব্রিটিশ সাংবাদিক ইভন রিডলি। দুই দিন কয়েকটি গ্রাম ঘুরে ফেরার পথে তালেবানদের হাতে ধরা পড়েন। ধরা পড়ার পর থেকে এই নারী সাংবাদিককে নিয়ে বিশ্ব মিডিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। রিডলিসহ তার পরিবার ও যুক্তরাজ্যের পূর্ণ ধারনা ছিলো, তালেবানরা রিডলির উপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করবে৷ কিন্তু ঘটতে থাকে উল্টো। তালেবানরা তার তো কোন ক্ষতি করেই নি বরং স্বসম্মানে মানবিকতার খাতিরে তাকে নিজ দেশে ফেতর পাঠানো হয়। যা ছিলো সবার কাছে আকাশকুসুম কল্পনার মত৷ কারণ বিশ্ব মিডিয়ার কল্যাণে (বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ফক্স নিউজ, বিবিসি, সিএনএন) মানুষের ধারণা তালেবানরা 'মধ্যযুগীয় বর্বর'। ১০ দিন আটক থেকে ফেরার পর নানা প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয় রিডলিকে। একজন ব্রিটিশ ট্যাক্সি চালক রিডলিকে চিনতে পেরে প্রশ্ন করে, 'তালেবানরা কি তোমাকে ধর্ষণ করেছে? কতবার? রিডলি ট্যাক্সি চালকে বলেন, 'তারা তো এমন কিছু করেই নি বরং আমার প্রতি সম্মান দেখিয়েছে। আমি তাদেরকে অনেক গালিগালাজ পর্যন্ত করেছি। তারপরও তারা আমার প্রতি সদয় ছিলো। তখন ট্যাক্সি চালক বলেন, এমন সুযোগ পেলে নাকি চালক নিজেই এর সদ্ব্যবহার করত। বই - ইন দ্য হ্যান্ড অব তালেবান মূল: ইভন রিডলি অনুবাদ: আবরার হামীম। ২০০১ সালে নাইন ইলেভের পরবর্তী সময়। টুইনটাওয়ার হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সন্দেহের দৃষ্টি তাক করে ওসামা বিন লাদেন তথা তালেবানের দিকে। বিশ্ব মিডিয়ার দৃষ্টি তখন আফগানিস্তানে। ইভন তখন লন্ডন ভিত্তিক নিউজ এক্সপ্রেস পত্রিকার রিপোর্টার৷ সংবাদ সংগ্রহে আসেন পাকিস্তানে। খাইবার পাক সীমান্ত দিয়ে বোরখা পরে ছদ্মবেশে আফগানিস্তানে প্রবেশ করেন ব্রিটিশ সাংবাদিক ইভন রিডলি। দুই দিন কয়েকটি গ্রাম ঘুরে ফেরার পথে তালেবানদের হাতে ধরা পড়েন। ধরা পড়ার পর থেকে এই নারী সাংবাদিককে নিয়ে বিশ্ব মিডিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। রিডলিসহ তার পরিবার ও যুক্তরাজ্যের পূর্ণ ধারনা ছিলো, তালেবানরা রিডলির উপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করবে৷ কিন্তু ঘটতে থাকে উল্টো। তালেবানরা তার তো কোন ক্ষতি করেই নি বরং স্বসম্মানে মানবিকতার খাতিরে তাকে নিজ দেশে ফেতর পাঠানো হয়। যা ছিলো সবার কাছে আকাশকুসুম কল্পনার মত৷ কারণ বিশ্ব মিডিয়ার কল্যাণে (বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ফক্স নিউজ, বিবিসি, সিএনএন) মানুষের ধারণা তালেবানরা 'মধ্যযুগীয় বর্বর'। ১০ দিন আটক থেকে ফেরার পর নানা প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয় রিডলিকে। একজন ব্রিটিশ ট্যাক্সি চালক রিডলিকে চিনতে পেরে প্রশ্ন করে, 'তালেবানরা কি তোমাকে ধর্ষণ করেছে? কতবার? রিডলি ট্যাক্সি চালকে বলেন, 'তারা তো এমন কিছু করেই নি বরং আমার প্রতি সম্মান দেখিয়েছে। আমি তাদেরকে অনেক গালিগালাজ পর্যন্ত করেছি। তারপরও তারা আমার প্রতি সদয় ছিলো। তখন ট্যাক্সি চালক বলেন, এমন সুযোগ পেলে নাকি চালক নিজেই এর সদ্ব্যবহার করত। এই উক্তিতে রিডলি প্রচন্ড ধাক্কা খান৷ প্রকৃত বর্বর কারা তা তার কাছে দিনের আলোর মত স্পষ্ট হতে থাকে৷ রিডলির আরেক বন্ধু একই প্রশ্ন করেছিলো। রিডলির সত্যিকারের উত্তর শোনার পর সেই বন্ধু বলেছিলো, 'তুমি নিজের আত্মসম্মান রক্ষার্থে অনেক সত্য লুকাচ্ছো।' রিডলি আটক হওয়ার পর তালেবানরা তাকে অনেকবার জেরা করেন। তিনি সাংবাদিক পরিচয় দেন। কিন্তু তালেবান গোয়েন্দারা খবর পান যে, রিডলি গুপ্তচর। এজন্য তাকে ছাড়া হচ্ছিলো না৷ রিডলি ছাড়া পেয়ে এসে জানতে পারেন, খোদ আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ তাকে তালেবানদের কাছে গুপ্তচর সাজাতে চেয়েছিলো। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো, গুপ্তচর ভেবে একজন ব্রিটিশ সাংবাদিককে তালেবানরা হত্যা করলে তাদের উপর হামলা করা সহজ হবে৷ জনমত যুক্তরাষ্ট্রের দিকে থাকবে ইত্যাদি। এলক্ষ্যের রিডলির সম্পর্কে সত্য মিথ্যার মিশেলে বিভিন্ন ধরনের স্পর্শকাতর তথ্য তালেবানদের কাছে সরবরাহ করে সিআইএ। কিন্তু সেই ফাঁদে পা দেননি মোল্লা ওমর। রিডলি আটক থাকা অবস্থায় মুসলমানদের নানা আচার-আচরণ দেখে মুগ্ধ হন। একজন তালেবান আলেম তাকে ইসলাম কবুল করার দাওয়াত দেন৷ রিডলি তখন বলেছিলেন, 'আমি এখান থেকে ছাড়া পেলে ইসলাম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো।' তালেবান নেতাও বলেছিলেন, আপনি শুধুমাত্র সাংবাদিক হলে স্বসম্মানে ফেরত পাঠানো হবে৷ উভয়কেই কথা রাখেন। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা শুরু করেন। ক্রমেই তিনি সত্যের আলোতে উদ্ভাসিত হতে থাকেন৷ ২০০৩ সালে তিনি ঘোষণা দিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি মুসলিম হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় মুসলমানদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে সোচ্চার কন্ঠ তোলেন। এই উক্তিতে রিডলি প্রচন্ড ধাক্কা খান৷ প্রকৃত বর্বর কারা তা তার কাছে দিনের আলোর মত স্পষ্ট হতে রিডলির আরেক বন্ধু একই প্রশ্ন করেছিলো। রিডলির সত্যিকারের উত্তর শোনার পর সেই বন্ধু বলেছিলো, 'তুমি নিজের আত্মসম্মান রক্ষার্থে অনেক সত্য লুকাচ্ছো।' রিডলি আটক হওয়ার পর তালেবানরা তাকে অনেকবার জেরা করেন। তিনি সাংবাদিক পরিচয় দেন। কিন্তু তালেবান গোয়েন্দারা খবর পান যে, রিডলি গুপ্তচর। এজন্য তাকে ছাড়া হচ্ছিলো না৷ রিডলি ছাড়া পেয়ে এসে জানতে পারেন, খোদ আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ তাকে তালেবানদের কাছে গুপ্তচর সাজাতে চেয়েছিলো। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো, গুপ্তচর ভেবে একজন ব্রিটিশ সাংবাদিককে তালেবানরা হত্যা করলে তাদের উপর হামলা করা সহজ হবে৷ জনমত যুক্তরাষ্ট্রের দিকে থাকবে ইত্যাদি। এলক্ষ্যের রিডলির সম্পর্কে সত্য মিথ্যার মিশেলে বিভিন্ন ধরনের স্পর্শকাতর তথ্য তালেবানদের কাছে সরবরাহ করে সিআইএ। কিন্তু সেই ফাঁদে পা দেননি মোল্লা ওমর। রিডলি আটক থাকা অবস্থায় মুসলমানদের নানা আচার-আচরণ দেখে মুগ্ধ হন। একজন তালেবান আলেম তাকে ইসলাম কবুল করার দাওয়াত দেন৷ রিডলি তখন বলেছিলেন, 'আমি এখান থেকে ছাড়া পেলে ইসলাম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো।' তালেবান নেতাও বলেছিলেন, আপনি শুধুমাত্র সাংবাদিক হলে স্বসম্মানে ফেরত পাঠানো হবে৷ উভয়কেই কথা রাখেন। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা শুরু করেন। ক্রমেই তিনি সত্যের আলোতে উদ্ভাসিত হতে থাকেন৷ ২০০৩ সালে তিনি ঘোষণা দিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি মুসলিম হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় মুসলমানদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে সোচ্চার কন্ঠ তোলেন।