ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ ডাক্তার বনবিহারী। মানুষের সেবা তাঁর জীবনের একমাত্র ব্রত। উত্তরবাংলার গঞ্জ থেকে চলে এলেন সুন্দরবনের রামগঙ্গায়। সঙ্গে বোবা মামণি ও তার শিশুপুত্র সন্তান। .... এই দীর্ঘ প্রথম সিক্যুয়েল শুরু হয়েছিল ‘দাউ দাউ আগুন”। সেই অধ্যায়ে আভাসিত ছিল কিছু এইসময়ের তরুণ-তরুণীর নতুন করে দেশের বুকে আগুন জ্বালানোর প্রয়াস, সমাজ বদলের স্বপ্ন।
দ্বিতীয় সিক্যুয়েল ‘কাঠকয়লার আগুন’।
সমরেশ মজুমদার বলছেন, ‘সন্তানের রক্তে কি পূর্বপুরুষ বা পূর্বসূরির অস্তিত্ব সুপ্ত থাকে? বিজ্ঞান বলছে, জিন কথা বলে।
বনবিহারী তার আশ্রিতা মামণির শিমুর নামকরণ করেছিলেন, সন্তান। যে তার মৃত বাবাকে দ্যাখেনি, মায়ের সঙ্গে যার কোনওদিন যোগাযোগ ঘনিষ্ঠ হয় নি।
বনবিহারী চোখের ওপর দেখলেন, সন্তানকে তার বাবার পথে হাঁটতে। ... ‘
বাবার পথে? এর অর্থ কী? সেই ‘আগুন-পথ’? কাঠকয়লার আগুন ধিকিধিকি জ্বলে, নিভতে চায় না। দুরন্ত গতিতে ছুটে চলা আগুন-উপন্যাস ‘কাঠকয়লার আগুন’।
সমরেশ মজুমদার
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের জন্ম ১০ মার্চ ১৯৪৪।
তাঁর শৈশব এবং কৈশাের কেটেছে জলপাইগুড়ির ডুয়ার্সের চা বাগানে। লেখাপড়ায় মন বসতাে না একদমই। ইচ্ছে ছিল নায়ক হবেন। তাই জলপাইগুড়ির বন্ধুদের নিয়ে সাজাতেন নাটকের দল। বাজারের জন্য দিদিমার দেয়া টাকা বাঁচিয়ে তাও খরচ করতেন বন্ধুদের নিয়ে। ষােলাে বছরের এক তরুণ সমরেশ কলকাতায় আসেন ১৯৬০ সালে। ভর্তি হন স্কটিশ চার্চ কলেজে, বাংলায়। এখানেও শুরু হলাে থিয়েটার আর নাটক লেখা, গল্প লেখার কাজ। নাটক লিখলেও নাটক হতাে না। অভিনয়ও জমছে না ঠিকমতাে। ততদিনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ পাসের সার্টিফিকেট জুটলাে কপালে। কিন্তু নায়ক হওয়ার স্বপ্ন আর পূরণ হলাে না। এবার নাটক বাদ। গল্প লেখায় সময় ব্যয়। ১৯৭৬ সালে দেশ পত্রিকায় ছাপা হলাে তাঁর প্রথম উপন্যাস দৌড়। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। প্রকাশিত গ্রন্থ ২১৫।
সমরেশ মজুমদার ১৯৮২ সালে পান ‘আনন্দ পুরস্কার'। কালবেলা উপন্যাসের জন্য সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান ১৯৮৪ সালে।