বাংলা উপন্যাস আধুনিককালের সৃষ্টি। কথা সাহিত্যের এটি অন্যতম ধারা। একজন সমালোচক উপন্যাস সম্পর্কে যথার্থই মন্তব্য করেছেন যে, একটি গুটি পোকার মধ্যে থেকে একটা বণ্যাঢ্য প্রজাপতি যেমন হঠাৎ সুন্দর ঝলমলে পাখা মেলে বেরিয়ে আসে, উপন্যাস ও তাই। কল্পনা ও বাস্তব এ দু’য়ের সংঘাতে ও সংমিশ্রণে যে জীবন তা-ই হচ্ছে উপন্যাসের বিষয়বস্তু।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
১৯মে ১৯০৮ সালে বিহারের দুমকা শহরে জন্ম। অঙ্কে অনার্স নিয়ে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময় বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে ১৯২৮ সালে লিখে ফেললেন প্রথম গল্প অতসী মামী। প্রকাশিত হল ‘বিচিত্রা পত্রিকায় এরপর মাত্র ২১ বছর বয়সে উপন্যাস দিবারাত্রির কাব্য’। আলােড়ন পড়ে যায়। এরপর এক-এক করে অনেক লিখেছেন। তার মধ্যে বিশেষভাবে স্মরণীয়—পদ্মানদীর মাঝি, পুতুলনাচের ইতিকথা, জননী, স্বাধীনতার স্বাদ ইত্যাদি। উল্লেখযােগ্য গল্পগ্রন্থ—প্রাগৈতিহাসিক, আজ কাল পরশুর গল্প, ছােট বকুলপুরের যাত্রী। বৈজ্ঞানিক মতাদর্শে দীক্ষিত এই কথাশিল্পী সারাজীবন চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেছেন। সাহিত্য-সাধনা ছিল জীবিকার একমাত্র অবলম্বন কোথাও কখনও আপােস করেননি। প্রয়াণ ৩ ডিসেম্বর ১৯৫৬।