ইমাম ইবনে রজব জন্মগ্রহণ করেন বাগদাদে ১৩৩৫ খ্রিস্টাব্দে (৭৩৬ হিজরি)। তার দাদা ছিলেন একজন ধর্মতত্ত্ববিদ, ইসলামী শাস্ত্রের বিশিষ্ট বিদ্বান, বিশেষ করে হাদিস শাস্ত্রের। তার বাবাও বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং বহু পণ্ডিতগণে কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। তার বয়স যখন পাঁচ, ইবনে রজবের পরিবার দামেস্কে স্থানান্তরিত হয়, তখন তিনি জেরুজালেম সফর করেন এবং সেখানে আল-আলা'ঈর কাছে জ্ঞানার্জন করেন। এরপর তিনি বাগদাদে যান এবং সেখান থেকে মক্কা গমন করেন। মক্কায় তার পিতা তার শিক্ষার জন্য সু-ব্যবস্থা করে রাখেন। এরপর তিনি মিশর সফর করেন এবং এরপর আবার দামেস্কে ফিরে যান, সেখানে তিনি ছাত্রদের শিক্ষাদান শুরু করেন। তিনি ইবনে আন-নাকীব (মৃত্যু ৭৬৯ হিজরি), আস সুবকি, আল ইরাকি (৮০৬ হিজরি), মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল আল খাব্বাজ এবং প্রমুখ বিদ্বানের কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি যুগশ্রেষ্ঠ 'আলিমে দ্বীন ইবনে কায়্যিম আল যাওজিয়্যাহ রহঃ এর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার কাছে অধ্যয়ন করেন। ইমাম আন-নববী রহঃ কর্তৃক রচিত প্রসিদ্ধ গ্রন্থ "চল্লিশ হাদীছ" এর একটি বৃহৎ ব্যাখ্যা (শরাহ) ইবনে রজব রচনা করেছিলেন (জামি' আল-উলুম ওয়াল হিকাম) যা আজ পর্যন্ত চল্লিশ হাদীছের শ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যা গ্রন্থ হিসেবে সমাদৃত হয়ে আসছে। জীবনের শেষ দিকে তিনি শ্রেষ্ঠতম হাদীছ গ্রন্থ ছহীহ আল-বুখারীর ব্যাখ্যা রচনা শুরু করেন কিন্তু "জানাজার সালাত অধ্যায়ে" পৌঁছার আগেই মৃত্যু বরণ করেন। তিনি সেই গ্রন্থের নাম দিয়েছিলেন ফাৎহুল বারী যা পরবর্তীকালে দার ইবনে জাওযী থেকে ৭ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। ইবনে রজবের মৃত্যুর ২০ বৎসর পর ইবনে হাজার আস্কলানী রহঃ ছহীহ আল-বুখারীর ব্যাখ্যা রচনা শুরু করেন এবং ইবনে রজব আল হাম্বালি রহঃ এর সম্মানে গ্রন্থের শিরোনাম দেন ফাতহুল বারী যেটা ছহীহ আল বুখারীর শ্রেষ্ঠতম ব্যাখ্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
আল্লামা হাফেয ইবনে কাসীর রহ.
ইমাম আহম্মদ ইবনে হাম্বল
ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ.
তাকিউদ্দিন আহমদ ইবনে তাইমিয়া (জন্ম:২২ জানুয়ারি ১২৬৩-মৃত্যু:২০ সেপ্টেম্বর ১৩২৮), পূর্ণ নাম: তাকিউদ্দিন আবুল আব্বাস আহমাদ ইবনে আবদুল হালিম ইবনে আবদুস সালাম ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আবুল কাশেম ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে তাইমিয়া আল হারানি ছিলেন একজন সালাফি ইসলামি পন্ডিত, দার্শনিক, ধর্মতাত্ত্বিক ও যুক্তিবিদ।মঙ্গোল আক্রমণের সময় তিনি জীবিত ছিলেন। তিনি ইসলামি আইনের ক্ষেত্রে হাম্বলি মাজহাবের অনুসারী ছিলেন।
ইবনে কুদামার পাশাপাশি তার অনুসারীরা তাকে হাম্বলি মাজহাবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রবক্তা হিসেবে গণ্য করেন। তাদের দুজনকে একত্রে “দুই শাইখ” ও ইবনে তাইমিয়াকে আলাদাভাবে শাইখুল ইসলাম বলে সম্বোধন করা হয়। ইবনে তাইমিয়া কুরআন ও সুন্নাহর প্রাথমিক যুগের ব্যাখ্যাকে গ্রহণ করার পক্ষাপাতি ছিলেন।ওয়াহাবিবাদ, সালাফিবাদ ও জিহাদপন্থার উপর তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে মঙ্গোলদেরবিরুদ্ধে জিহাদের ফতোয়ার কারণে তিনি বেশি আলোচিত। মোঙ্গলরা এসময় ইসলাম গ্রহণ করলেও শরিয়ার অনুসরণ না করায় তিনি তাদের অমুসলিম হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন।
গ্রন্থ রচনা: তিনি ৫০০ এর অধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তবে ড: সিরাজুল হক তাঁর ২৫৬টি গ্রন্থের নাম উল্লেখ করেছেন। "আল-জাওয়াবুস সহীহ লিমান বাদালা দ্বীনিল মাসিহ " ধর্ম তত্ত্বের উপর তার লিখিত গ্রন্থ।