ভূমিকা অপরাপর আইনের ন্যায় সাংবিধানিক আইন সংবিধিবন্ধ আইনের গ্রন্থমালায় নিঃসন্দেহে একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ আইন।
সাংবিধানিক আইনের পরিধি সুবিস্তৃত এবং আদালত বা ট্রাইব্যুনালের সম্মুখে আনীত দেওয়ানী, রাজস্ব বা অন্যান্য এখতিয়ার সম্পর্কিত প্রায় সকল মামলা ও কার্যধারা এই আইন দ্বারা পরিচালিত হইয়া থাকে। এই আইনের ধারাসমূহে মৌলিক এবং নিয়মাবলীতে পদ্ধতিগত আইনের অপূর্ব সমাবেশ।
বইখানিতে পদ্ধতিগত বিষয়ের যাবতীয় নীতিমালা বিশদভাবে বর্ণনা করা হইয়াছে। সাংবিধানিক আইন হইল এমন এক ধরনের পদ্ধতিগত আইন যাহা বাস্তবভিত্তিক আইনের সংস্পর্শে আসিয়া পরিপূর্ণতা লাভ করে এবং জনগণের অধিকার সৃষ্টির পথকে সুগম করিয়া দেয়।
সাংবিধানিক আইনের অতীব প্রয়োজনীয় বিষয়গুলির বিস্তারিত ব্যাখ্যা করিয়া সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় বিষয়ভিত্তিকভাবে ৩৩টি অধ্যায়ে লিখিত হইয়াছে। বইখানি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ইসলামী ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও পাস কোর্সের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী ছাত্র-ছাত্রীগণের পরীক্ষায় অধিক নম্বর প্রাপ্তির উপযোগী করিয়া লেখা হইয়াছে। শুধু শিক্ষার্থীগণ নয় বইখানি আইনজীবিগণের আইন ব্যবসায়ে এবং বিচারকগণের বিচারকার্য পরিচালনায় সহায়ক হইবে, আইনের ছাত্র শিক্ষকগণের জ্ঞানের প্রসারতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করিবে এবং পেশাজীবি তথ্য সাদারণ নাগরিকের অশেষ উপকারে আসিবে।
বইখানিকে আইন শিক্ষার্থীগণের উপযোগী করিবার জন্য আইনের প্রতিভাময়ী ছা্ত্রী দিলরুবা মাজেদা পারভীন ও মেধাবী ছাত্র শেখ ওহিদুজ্জামান আমাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করিয়াছে। এইজন্য আমি তাহাদের নিকট ঋণী।
বইখানি প্রণয়নে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের যে সকল খ্যাতিমান লেখকবৃন্দের বই হইতে সাহায্য গ্রহণ করা হইয়াছে তাঁহাদের নিকট আমি কৃতজ্ঞ।
খোশরোজ কিতাব মহল-এর পরিচালক বইখানি প্রকাশনার দায়িত্ব লইয়াছে। সুতরাং বইখানি পাঠক সমাজের নিকট পোঁছাইয়া দেওয়ার দায়িত্ব ও কৃতিত্ব সম্পূর্ণই তাঁহার।
সময় ও সুযোগের অভাবে বইখানিতে হয়ত কিছু ভুল থাকিয়া যাইতে পারে। সহানুভূতি পাইলে পরবর্তী সংস্করণে তাহা শোধরাইতে চেষ্টা করিব। যথেষ্ট চেষ্টা সত্ত্বেও মুদ্রণজনিত বিভ্রাট পরিদৃষ্ট হওয়া বিচিত্র নয়। সহৃদয় পাঠক-পাঠিকা যদি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে অবলোকন করেন এবং গঠনমূলক পরামর্শদানে বাধিত করেন তবে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ থাকিব।
শিক্ষার্থীগণের সুবিধার্থে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃক প্রণীত সর্বশেষ সিলেবাস বইয়ের শেষে দেওয়া হইল।
ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া
সূচি প্রথম খণ্ড প্রথম অধ্যায় * রাষ্ট্রের সংজ্ঞা ও উপাদান
দ্বিতীয় অধ্যায় * সার্বভৌমত্ব
তৃতীয় অধ্যায় * সরকারের শ্রেণীবিভাগ * যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা
চতুর্থ অধ্যায় * ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ
পঞ্চম অধ্যায় * আইনের শাসন
দ্বিতীয় খণ্ড সাংবিধানিক আইন
প্রথম অধ্যায় * সংবিধান
দ্বিতীয় অধ্যায় * সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক আইন
তৃতীয় খণ্ড বাংলাদেশের সংবিধানের ক্রমবিকাশ
প্রথম অধ্যায় * সাংবিধানিক অগ্রগতির উল্লেখযোগ্য ঘটনা
দ্বিতীয় অধ্যায় * প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন
তৃতীয় অধ্যায় * পাকিস্তানের প্রথম গণপরিষদ ১৯৫৬ ও ১৯৬২ সালের সংবিধান
চতুর্থ খণ্ড বাংলাদেশ ও জাতীয়তাবাদ সম্পর্কিত
প্রথম অধ্যায় * বাঙালী জাতীয়তাবাদ ও বাংলাদেশ
দ্বিতীয় অধ্যায় * সংবিধানের সংশোধনীসমূহ
পঞ্চম খণ্ড রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি
প্রথম অধ্যায় * সাধারণ আলোচনা
দ্বিতীয় অধ্যায় * বাংলাদেশ সম্পর্কিত * রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি
ষষ্ঠ খণ্ড মৌলিক অধিকার
প্রথম অধ্যায় * সাধারণ আলোচনা
দ্বিতীয় অধ্যায় * মৌলিক অধিকার
সপ্তম খণ্ড আইনসভা এবং আইন ও অধ্যাদেশ প্রণয়ন
প্রথম অধ্যায় * সংসদ
দ্বিতীয় অধ্যায় * আইনপ্রণয়ন ও অর্থ সংক্রান্ত পদ্ধতি
তৃতীয় অধ্যায় * অধ্যাদেশ প্রণয়ন ক্ষমতা
অষ্টম খণ্ড বিচারবিভাগ
প্রথম অধ্যায় * বাংলাদেশের বিচারবিভাগ
দ্বিতীয় অধ্যায় * সুপ্রীম কোর্ট
তৃতীয় অধ্যায় * অধঃস্তন আদালত
চতুর্থ অধ্যায় * প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল
পঞ্চম অধ্যায় * রীট
ষষ্ঠ অধ্যায় * হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি অপসারণ
সপ্তম অধ্যায় * আপীল বিভাগ
নবম খণ্ড নির্বাহী বিভাগ
প্রথম অধ্যায় * রাষ্ট্রপতি
দ্বিতীয় অধ্যায় * প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা
দশম খণ্ড বৃটিশ রাজতন্ত্র
প্রথম অধ্যায় * রাজতন্ত্রের বিভিন্ন দিক
দ্বিতীয় অধ্যায় * রাজকীয় পরমাধিকার
একাদশ খণ্ড বৃটিশ সংবিধান
দ্বাদশ খণ্ড বৃটিশ পার্লামেন্ট
ত্রয়োদশ খণ্ড বৃটিশ বিচারবিভাগ
চর্তুদশ খণ্ড মন্ত্রিপরিষদ
পঞ্চদশ খণ্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান
প্রথম অধ্যায় * সংবিধানের বিভিন্ন দিক
দ্বিতীয় অধ্যায় * যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি
তৃতীয় অধ্যায় * মার্কিন কংগ্রেস
চতুর্থ অধ্যায় * যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থা
বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া
বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৬ সালে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ (সম্মান) এবং পাবলিক অ্যাডমিনেস্ট্রেশন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আলাদাভাবে মাস্টার্স করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি নেন। ১৯৭৬ সালের ১ জানুয়ারি তিনি মুন্সেফ হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৩ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসাবে নিয়োগ পান। বিভিন্ন বিষয়ে তিনি শতাধিক বই লিখেছেন। ২০০২ সালের ২৯ জুলাই হাই কোর্টে অতিরিক্ত বিচারক হিসাবে নিয়োগ পান ছিদ্দিকুর রহমান। স্থায়ী নিয়োগ পান ২০০৪ সালের ২৯ জুলাই। একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধেও তিনি অংশ নেন।