গোকুলনগর হাইস্কুলে একসাথে তিনজন ছাত্র ভর্তি হয়েছে। তিনভাই। তাদের চেহারা এক। বয়স এক। হেডস্যার চোখ কপালে তোলেন। যমজ পর্যন্ত তো দেখছি। এইটা আবার কোন তামশা! অনেক জল ঘোলা শেষে হেডস্যারই তাদের নাম দেন- টমজ। পাতলা হুমায়ুনের কল্যাণে স্কুলে খবর ছড়াতে সময় লাগে না। হুমায়ুনের পেটে সমস্যা। হুমায়ুন হেডস্যারের পিয়ন। হুমায়ুনের বাবার নাম আকবর। চাকরির প্রথম দিন হেডস্যার হুমায়ুনের বায়োডাটা দেখে চোখ কপালে তুললেন। করেছিস কি তোরা! বাপ-বেটা মিলে তো ইতিহাসের তো সাড়ে সর্বনাশ ঘটিয়েছিস। এতদিন জানতাম হুমায়ুনের ছেলে আকবর। এখন দেখছি আকবরের ছেলে হুমায়ুন। মোঘল সা¤্রাজ্য তো ওলট-পালট করে দিলিরে। এই টমজদের নিয়ে গোকুলনগর হাইস্কুলে চলতে থাকে নানা কাণ্ড। ইতিহাসের জলিল স্যার, হেডস্যারকে সংবধর্না দেয়ার আয়োজন করেন। কারণ তিনি বাংলা শব্দভাণ্ডারে টমজ নামে একটি নতুন শব্দ যোগ করেছেন। ব্যাকরণের খাদিজা ম্যাডাম ক’মাস পরে পরে বদলান চশমার পাওয়ার। টমজদের চিনতে গিয়ে তার চোখের বারোটা বেজেছে। ওদিকে এক চেহারার সুযোগে টমজ তিনভাই- আপন, পাপন আর রাপন সমানে মেরে যাচ্ছে ‘এক ঢিলে তিন পাখি’।
পলাশ মাহবুব
পলাশ মাহবুব লেখালেখি করছেন প্রায় দুই দশক ধরে। শুরুতে ছড়া লিখেছেন দাপটের সঙ্গে। এরপর গল্প; ছোট-বড় সবার জন্য। উপন্যাস লেখার শুরু তার কিছু পর থেকে। ‘টো টো কোম্পানি’ তার জনপ্রিয় কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সিরিজ। ইতিমধ্যে এই সিরিজের সাতটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে শুরু করেছেন আরেকটি কিশোর সিরিজ ‘লজিক লাবু’। সেটিও কিশোর পাঠকদের আগ্রহে চলে এসেছে। টেলিভিশনের জন্য নাটক লিখছেন বেশ অনেক বছর ধরে। বর্তমানে দেশের জনপ্রিয় নাট্যকারদের মধ্যে তিনি একজন। রম্য লেখায় পলাশ মাহবুবের আছে নিজস্ব কথন ভঙ্গি। সাবলিল ভাষা আর বক্তব্যের তীব্রতা তার লেখার সৌন্দর্য। অনুষ্ঠান নির্মাতা হিসেবেও পলাশ মাহবুব একটি অগ্রগণ্য নাম। টেলিভিশনের জন্য ইতিমধ্যে দুই হাজারেরও বেশি অনুষ্ঠান নির্মাণ করেছেন। লেখালেখির জন্য পেয়েছেন সম্মানজনক অগ্রণী ব্যাংক-বাংলাদেশ শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গের অন্নদাশঙ্কর রায় সাহিত্য পুরস্কার, ইউনিসেফ মীনা অ্যাওয়ার্ড, এসিআই-আনন্দ আলো শিশুসাহিত্য পুরস্কারসহ আরও কিছু পুরস্কার। নির্মাতা হিসেবে পেয়েছেন নাট্যসভা পদক। পলাশ মাহবুব পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। সাংবাদিকতা আর অনুষ্ঠান নির্মাণের ওপর উচ্চতর প্রশিক্ষন নিয়েছেন দেশ ও দেশের বাইরে। ফলে পেশা হিসেবে ঘুরে ফিরে ওই সাংবাদিকতা আর টেলিভিশনের অনুষ্ঠান বিভাগে কাজ করেছেন এবং করছেন। পলাশ মাহবুব বর্তমানে অনলাইন নিউজ পোর্টাল সারাবাংলা ডটনেট ও দৈনিক সারাবাংলা’র উপ সম্পাদক হিসেবে কর্মরত। পাশাপাশি তিনিিএকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক।