তুমি সেই রাজা তুমি সেই রানী
তুমি সেই রাজা তুমি সেই রানী -- মাওলানা আবদুল মাজেদ দরিয়াবাদী ------------------------- বই: তুমি সেই রাজা তুমি সেই রানী দাম্পত্য- জীবনের মূল সংবিধানটা কী, মূলত তাই বলে দেয়া হয়েছে গল্পের ভাষায়... উন্নত সাহিত্যে শৈলী'র আবেগপ্লাবিত ধারায়। যে সংবিধান পড়লে এবং মানলে দাম্পত্য-জীবন আমূল বদলে যাবে, প্রাপ্তি ও ফলাফল আবার নতুন হয়ে যাবে। উষর প্রাণহীন মরু বদলে যাবে উচ্ছল ঝরনাধারায়। জীবনকে যদি আচ্ছন্ন ও মেঘলা করে রাখে যদি ছোট ছোট দুঃখকণা, সেগুলিও বদলে যাবে সুখ-আনন্দের মহাকাব্যগাথায়... ভোর না হতে চাওয়া দুঃসহ কালো রাতগুলি ও হয়ে যাবে 'সে-ই ফেলে আসা আনন্দঘন... মধুময়। আল্লাহর নবী (সা.) বলেছেন... বিয়ে হলো নবীদের সুন্নত ও আদর্শ। বিবাহ কোন শাস্তি নয়। মানব রচিত কোনো নিপীড়নমূলক আইনও নয়, এ এক ইবাদাত। আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভের একটি মাধ্যম। ঈমান পরিপূর্ণ করার একটি পথ। আল্লাহ পাকের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করার সেতু-বন্ধন। লেখক বুঝাতে চেয়েছেন, যদি বিবাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন রাস্তা খোলা থাকতো, তাহলে এই উম্মতের নারী জাতির সবচেয়ে বেশি হকদার আয়েশা, ফাতেমা, খাদিজা ( রা.) এরাই তো এই পথে যেতেন। যেহেতু তাঁদের যখন সেই পথে চলতে হয়েছে, অন্যান্য নারীদের ও চলতে হবে। একটু ভেবে দেখি তো? আমরা আজ কার অনুসরণ করে ধন্য হচ্ছি? কার সাথে মিল খুঁজে পাচ্ছি? বিবাহের পরই তো হযরত আয়েশা (রা.) পৌঁছে গেছেন সম্মান ও মর্যাদার শ্রেষ্ঠ আসনে। হয়ে গেছেন উম্মতের মা। নারী জাতির আদর্শ, আমাদের মাথার মুকুট, আমাদের গর্ব ও অহংকার। ছোট্ট একটু কথা দিয়ে লেখক এই দুই দলের উদাহরণ দিয়েছেন... যেভাবে বর্ণনা করেছেন, দুই মুসাফির। একটু পরেই যাত্রা হবে এক দূর্গম সফরের উদ্দেশ্যে। একজন 'গাইড বুক' খরিদ করে সেখানকার ভৌগলিক অবস্থান, মৌসুম, আবহাওয়া সেখানকার ভাষা মোটামুটি অনেক কিছুই জেনে নিলো। আরেকজন, অন্যের কাছে দারস্থ হওয়া কে অপমান করে সে বললো, আমার সফর আমি করবো, যেদিকে চাইবো সেদিকে যাবো, কাকে আবার কী জিজ্ঞেস করবো?? দ্বিতীয় মুসাফিরের মতোই একদল নারী আছেন আমাদের সমাজে, যাদের কারণে প্রতিদিন উদ্বেগজনক হারে তালাক ও বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটছে যা সবারই জানা। খুব দরদভরে লেখক তাঁর মেয়ে ও ভাতিজীদের বিবাহ পরবর্তী জীবনের জন্য উপদেশ দিয়েছেন। অনেকটা এভাবে লিখেছেন... মা আমার! একটু পরেই তুমি এক নববধূ বনতে যাচ্ছো। আগামীকাল থেকেই তোমার আগের দুনিয়া বদলে যাবে, দুই দুনিয়ার মাঝে থাকবে অনেক ফারাক, নিজেকে ওয়াকফ করতে হবে অন্য একজনের সেবায়। তোমাকে মিটিয়ে দিতে হবে আত্ম-কেন্দ্রিক ও আমিত্মবোধ। স্বভাব-প্রকৃতির মুখে ও পরাাতে হবে সংযম-লাগাম। এই মঞ্জিল পেরোনো নিঃসন্দেহে শক্ত এবং এই দায়িত্ব পালন ও নিশ্চিতভাবেই দুরূহ। কিন্তু মা আমার! বিনিময়ে কী পুরস্কার অপেক্ষা করছে তোমার জন্য জানো? যে নারী জীবনের মঞ্জিলগুলো পেরিয়ে আখেরী মঞ্জিলে এসে ইহলোক ত্যাগ করবে নিজের স্বামীকে প্রীত ও সন্তুষ্ট করে ----তার ঠিকানা জান্নাত। (মিশকাত/তিরমিযী) বিদায়ের আগে বলে যাচ্ছি, আপনি যদি 'বর' হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি হচ্ছেন সেই রাজা, সেই আদর্শ স্বামী। আর যদি 'বধূ' হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি ই সেই রানী, আদর্শ স্ত্রী। ভবিষ্যত 'বরবধূর জন্য একই রকম প্রয়োজনীয়। তাই সবাইকে পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে শেষ করছি।