দুই বছর রাশিয়ান ফ্রন্টে কাটানাের পর প্রথমবারের মতাে তিন সপ্তাহের ছুটি পেলাে আর্নস্ট গ্রেবার। ছুটি দিয়ে এর আগেও সৈনিকদের ছুটি প্রত্যাহার করা হয়েছে, কাজেই বাবা-মাকে চিঠি লিখে সে ব্যাপারে জানানাের সাহস ওর হলাে না। আশা দিয়ে আশা ভাঙা বড় খারাপ জিনিস। অবশেষে বাড়ি ফিরে গ্রেবার দেখল, তার পুরাে বাড়িটাই বােমার আঘাতে উড়ে গেছে। বাবা-মার চিহ্নও নেই। কেউ জানে না তারা বেঁচে আছে কি
এরিক মারিয়া রেমার্ক
বিপ্লবী, ইহুদী, মেডিকেলের ছাত্র আর ছিচকে অপরাধীসহ ইউরােপের নানা স্থানে ছড়িয়ে থাকা কয়েক হাজার বিক্ষিপ্ত ইহুদীর মধ্যে ছিল স্টেইনার আর কার্ন। চেকোশ্লাভিয়ার অস্থায়ী নিবাসে দুই সপ্তাহের জন্য থাকার কথা ছিল তাদের, কিন্তু থেকেছে তারও বেশি। ওখানকার কর্মকর্তারা ধাক্কিয়ে বের করে দিল, যাবে কোথায় ওরা? ১৯৩৯ সালের এই ইউরােপে তাদের জন্য কোনও জায়গা নেই। এক দেশের বর্ডার পেরিয়ে আসা মানুষগুলাে তাে আরেকটা বর্ডার পার করার চেষ্টা করতেই পারে! দিন এনে দিন খাচ্ছিল ওরা। জুতাের ফিতে আর সেফটিপিন বিক্রি করে কামাচ্ছিল কয়টা পয়সা, এর মধ্যেই স্টেইনার আর কার্ন লক্ষ্য করল ওদের জীবনে এখনও রয়ে গেছে আনন্দের উৎস! প্যারিস আর প্রেম-নাজিদের নিষ্ঠুরতা আর অন্যায় আইনের পৃথিবীতে এমন দুটো আনন্দধারা কেউ কেড়ে নিতে পারেনি। এখনও হারিয়ে যায়নি মানবতা; প্রেমে পড়ার, টিকে থাকার গল্প অন্যদের বলে যাওয়ার মধ্যে যে আনন্দটি আছে তার সঙ্গে আর কিছুর তুলনা হয় না। তাই বলে গেল ওরা, যেন গল্পটি কোনােদিন হারিয়ে না যায়