১৯০৫ সালে আইনস্টাইন তার স্পেশাল থিওরি অফ রিলেটিভিটি প্রকাশ করার সাথে সাথে বিশাল এক ঝড়ে যেন লন্ডভন্ড হয়ে গেল বাস্তবতা বা ‘রিয়েলিটির ধারণা। হতবাক হয়ে আমরা জানতে পারলাম আসলে এই মহাবিশ্বে কিছুই ধ্রুব নয়, সবকিছু আপেক্ষিক। এমনকি সময় পর্যন্ত!
কিন্তু এটা ছিল মাত্র শুরু তারপর আইনস্টাইন নিয়ে এলেন জেনারেল থিওরি অফ রিলেটিভিটি'। বড় অবদান রাখলেন নতুন থিওরি ‘কোয়ান্টাম মেকানিক্সে', এলেন হাইসেনবার্গ, হাবল, স্রডিঞ্জার, অবিশ্বাস্য দ্রুততায় বদলাতে লাগল ‘রিয়েলিটির ধারণা। কোয়ান্টাম ফিল্ড এমনকি বদলে দিল লােকালিটির ধারণা। তারপর এলাে পার্টিকেল ‘এনট্যানগেলমেন্ট'-এর ধারণা। ব্যাপারটা এতই অদ্ভুত ছিল যে একসময় আইনস্টাইনও একে পুঁকি/ব্যাখ্যাতীত বা ভৌতিক বলে আখ্যা দিতে বাধ্য হলেন, তিনি একে বললেন, ‘সুকি অ্যাকশন অ্যাট ডিসটেন্স'। প্রমাণিত হলাে দুটি সাব-এটোমিক পার্টিকেল একই সাের্সে তৈরি করার পর অনেক দূরে, এমনকি পরস্পর থেকে পঞ্চাশ কিলােমিটার দূরে সরিয়ে নেওয়ার পরও কোনাে এক ব্যাখ্যাতীত উপায়ে নিজেদের মধ্যে এই যােগাযােগ অটুট রাখতে পারে। আশ্চর্যজনকভাবে বর্তমানে জটিল অর্গানিক কম্পাউন্ডেও এই ধরনের এনট্যানগেলমেন্ট সম্ভব হয়েছে। অনেক নামকরা বিজ্ঞানী, যেমন নােবেল বিজয়ী ফিজিসিস্ট বিজ্ঞানী ব্রায়ান জোসেফসন, ভিয়েনা ইউনিভার্সিটির জোহান সামহ্যামারের মতাে বিখ্যাত মানুষেরাও এখন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, উচ্চতর প্রাণীর ক্ষেত্রেও এ ধরনের এনট্যানগেলমেন্ট খুবই সম্ভব।
এরপর এলাে ‘স্ট্রিং থিওরি'। এই থিওরি অনুযায়ী প্রতিটি বস্তুই সূক্ষ্ম কিছু স্ট্রিং-এর সমন্বয়ে তৈরি, আর প্রতিটি বস্তুরই আলাদা আলাদা নিজস্ব ভাইব্রেশন আছে। এই স্ট্রিং আর ভাইব্রেশনগুলাে পরস্পরের সাথে ইন্টারেকশন করতে পারে। অনেকেই মনে করেন মনােবিজ্ঞানেরও বেশকিছু জটিল ধাঁধা যেমন- টেলিপ্যাথি, ডিসট্যান্ট ভিউইং, মাইন্ড রিডিং ইত্যাদির ব্যাখ্যা হয়তাে স্ট্রিং থিওরির সমাধানের মধ্যেই লুকিয়ে আছে।
হাসান তারেক চৌধুরী
হাসান তারেক চৌধুরী আদি বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাসিমপুর গ্রামে। জন্ম ঢাকায় ২৩ মে ১৯৭০ তারপর থেকে লেখাপড়া ও বেড়ে উঠা ঢাকাতেই। ব্যক্তিজীবনে এক ছেলে, এক মেয়ে, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে আঁটোসাটো সংসার । শিক্ষাজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করলেও কর্মজীবনে ব্যবস্থাপনাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। বর্তমানে তিনি একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে প্রধান মানব সম্পদ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। শিক্ষা ও কর্মজীবনের এই ব্যাপ্তিই তার বহুমাত্রিক চরিত্র ও আগ্রহের অন্যতম প্রকাশ। স্কুলজীবন থেকে সাহিত্য অনুরাগী, আজীবন বিজ্ঞানমনস্ক, এদিকে কর্মযােগ ব্যবস্থাপনায়। ভিন্নমাত্রার এই ব্যতিক্রমধর্মী যােগ মানুষের মনােজগত সম্পর্কে তাকে আগ্রহী করে তােলে, যার ফসল। প্যারাসাইকোলজি ও স্পেকুলেটিভ সায়েন্স ফিকশনের সমন্বয়ে লেখা এক নতুন ধারার বই। প্রথম বই দ্বিখণ্ডিত বিপুল পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করা পর যুগল মানব’ এই ঘরানায় তার লেখা দ্বিতীয় বই