বাস্তবতার কঠিন থাবায় যখন দূর ও কাছের মানুষগুলােকে একই রকম দেখায়, সময়ের হাতে মার খেতে খেতে শরীরের এক ইঞ্চি জায়গাও আর অক্ষত থাকে, সন্ত্রাসের আগুনে পুড়তে পুড়তে প্রতিটি প্রত্যঙ্গই অলাতচক্রের অংশ হয়ে ওঠে, তখন হয়তাে কবিতাকেই শেষ আশ্রয় বলে মনে হয়। জীবনের কোণায় কোণায় কবিতা বিছিয়ে দেয় শান্তির গিরিখাত। ভস্ম, নুড়ির গুঁড়াে, বাতাসের কণা, ব্যথার দীপ্তি দিয়ে অক্ষরগুলাে সাজাতে তখন আর তেমন অসুবিধা হয় না। যুগ যুগ ধরে এই প্রক্রিয়ায় বেড়ে ওঠা আলাে ও তাপকে একত্রিত করে এক মলাটে তুলে ধরার নামই সমগ্র। পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ দিয়ে বাঁধানাে কবিতাসমগ্র’র এই প্রথম খণ্ডটি প্রকাশ করতে পেরে আমি আনন্দিত। ধন্যবাদ প্রিয় প্রকাশক মনিরুল হককে, যাঁর সময়ােপযােগী প্রস্তাবনা ও তা বাস্তবায়নে একাগ্রতার কাছে আমি ঋণী।
হাসান আল আবদুল্লাহ
হাসান আল আব্দুল্লাহ নতুন ধারার সনেটের প্রবর্তক, নামঃ স্বতন্ত্র সনেট। বেশ কয়েকজন বাঙালী, বৃটিশ ও মার্কিন কবি ইতিমধ্যে তাঁর এই ধারায় বাংলা ও ইংরেজিতে সনেট রচনা করছেন। মানুষ ও মহাবিশ্বের চলমানতার বিশাল পটভূমিতে মহাকাব্য রচনা ছাড়াও তিনি লিখেছেন ছন্দ বিষয়ক বই কবিতার ছন্দ। একাধিক সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর নির্বাচিত কবিতা', স্বতন্ত্র সনেট’ ও ‘বিশ্ব। কবিতার কয়েক ছত্র ইত্যাদি গ্রন্থের। উপন্যাস, ছােটো গল্প, প্রবন্ধ, গান, নাটক, ভ্রমণ কাহিনীসহ সাহিত্যের নানা শাখায় বিচরণ করছেন তিনি। ইংরেজি অনুবাদেও তার তিনখানা বই বেরিয়েছে আমেরিকা থেকে।
হাসানআল আব্দুলাহ ২০১৬ সালে চীন সরকারের আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সিল্ক রুট কবিতা উত্সবে যােগ দেন এবং একই বছর বিশ্ব কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্যে পান ইয়ােরােপীয় কবিতা পুরস্কার 'হেমার মেডেল'। স্বতন্ত্র সনেটের জন্যে ২০১০ সালে তিনি পান লেবুভাই ফাউন্ডেশন পুরস্কার। ইংরেজি, ফরাসী, স্প্যানিশ, কোরিয়ান, চাইনিজ, পােলিশ ও ভিয়েনামী ভাষায় অনূদিত হয়েছে তার কবিতা; স্থান পেয়েছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক অ্যালেজিতে। আমব্রিত কবি হিসেবে কবিতা পড়েছেন মার্কিন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি আন্তর্জাতিক দ্বিভাষিক কবিতা পত্রিকা শব্দগুচ্ছ সম্পাদক এবং ১৯৯৮ সাল থেকে নিউইয়র্ক সিটির হাইল গণিত শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তার একাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ৪০।