আজ যে ঘটনা আপনাদের শােনাতে যাচ্ছি, সেটা একেবারে নিখাদ সত্য। স্মৃতিগুলাে আজও মনের মাঝে এতটা উজ্জ্বলভাবে গেঁথে আছে যেন মাত্র গতকালের কথা। অথচ সেই রাতের পর পেরিয়ে গেছে বিশটি বছর। এতগুলাে বছরে গল্পটা মাত্র একজনকেই বলেছি। এবং আজ রাতে তীব্র অনিচ্ছাসত্ত্বেও ঘটনাটা খুলে বলব । বিশেষভাবে অনুরােধ করব, আমার ওপর জোরপূর্বক মতামত চাপিয়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এ ঘটনার কোনও ব্যাখ্যা আমি চাই না, কোনও তর্ক করার ইচ্ছেও নেই। আমার মন এ ব্যাপারে বেশ স্থির । নিজের বােধশক্তির ওপর নির্ভর করে সেই অনুযায়ী চলার মত বিশ্বাসও ধারণ করে । বেশ তাে, ঘটনাটা বছর বিশেক আগের। বনমােরগ শিকারের মৌসুম শেষ হতে আর মাত্র এক বা দু’দিন বাকি। সারাদিন বন্দুক ঘাড়ে নিয়ে বনে বনে ঘুরেছি, বলার মত অন্য কোনও শখও ছিল না। ডিসেম্বর মাস- হু হু করে পশ্চিমা বাতাস বইছে। সর্বোত্তর ইংল্যান্ডের নিরানন্দ, বিস্তীর্ণ জমিতে পথ হারালাম আমি। পথ হারানাের জন্য এরচেয়ে বাজে জায়গা আর হয় না। এদিকে তুলাের মত তুষারকণা ঝড়ের পূর্বাভাস হয়ে নেমে আসছে আকাশ থেকে, সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে চারদিকে। ঘনায়মান আঁধারের মাঝেই হাত দিয়ে চোখদুটো আড়াল করে তাকিয়ে রইলাম দিগন্তের দিকে, যেখানে জলাভূমির বেগুনি সীমানা ছােট ছােট পাহাড়ের একটা সারির সাথে মিলেমিশে গেছে, এখান থেকে প্রায় দশ-বারাে মাইল দূরত্ব।