‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ কেবল মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নয়, বাংলা সাহিত্যে এক সাড়া জাগানাে উপন্যাস। একজন ফরাসী অধ্যাপক এবং সাহিত্যিক এই উপন্যাসকে বিশ্বসাহিত্যের সঙ্গে তুলনা করেছেন। আমি জানি এই একটি মাত্র উপন্যাসের উপর গবেষণা করে প্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন ডকটরেট ডিগ্রি লাভ করেছেন। ভাষা ব্যবহার, চরিত্রবিশ্লেষণে, উপস্থাপনায়, দৃষ্টিভঙ্গিতে এই উপন্যাস স্বতন্ত্র। সুখের কথা, নানা বিশ্ববিদ্যালয় এই উপন্যাসকে পাঠ্যস্তরে নির্দিষ্ট করে আলােচনার ব্যাপকতর সুযােগ করে দিয়েছেন।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
১৯মে ১৯০৮ সালে বিহারের দুমকা শহরে জন্ম। অঙ্কে অনার্স নিয়ে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময় বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে ১৯২৮ সালে লিখে ফেললেন প্রথম গল্প অতসী মামী। প্রকাশিত হল ‘বিচিত্রা পত্রিকায় এরপর মাত্র ২১ বছর বয়সে উপন্যাস দিবারাত্রির কাব্য’। আলােড়ন পড়ে যায়। এরপর এক-এক করে অনেক লিখেছেন। তার মধ্যে বিশেষভাবে স্মরণীয়—পদ্মানদীর মাঝি, পুতুলনাচের ইতিকথা, জননী, স্বাধীনতার স্বাদ ইত্যাদি। উল্লেখযােগ্য গল্পগ্রন্থ—প্রাগৈতিহাসিক, আজ কাল পরশুর গল্প, ছােট বকুলপুরের যাত্রী। বৈজ্ঞানিক মতাদর্শে দীক্ষিত এই কথাশিল্পী সারাজীবন চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেছেন। সাহিত্য-সাধনা ছিল জীবিকার একমাত্র অবলম্বন কোথাও কখনও আপােস করেননি। প্রয়াণ ৩ ডিসেম্বর ১৯৫৬।