সাতকাহন (অখণ্ড) (হার্ডকভার) - সমরেশ মজুমদার | বইবাজার.কম

সাতকাহন (অখণ্ড) (হার্ডকভার)

    5 Ratings     2 Reviews

বইবাজার মূল্য : ৳ ৭৮৪ (২০% ছাড়ে)

মুদ্রিত মূল্য : ৳ ৯৮০





WISHLIST


Related Bundles


Bundle Title Price


Overall Ratings (2)

Muhammad Mosharrof Hussain
09/04/2020

#রিভিউ #সাতকাহন ❤ #সমরেশ_মজুমদার এক মেয়ে দীপা_ দীপাবলি, ভাগ্যের প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নিরন্তর যুদ্ধের এক কাহিনি চালচিত্রে যুক্ত হয়েছে উত্তর বাংলার চা বাগান, গাছগাছালি, আংরাভাসা নদী সেই সাথে পঞ্চাশের কলকাতা ও শহরতলী,কো-এডুকেশন কলেজ,মেয়েদের হোস্টেল,কফি হাউস,সমকালীন ছাত্র ও রাজনৈতিক আন্দলোনের ছবি। উত্তরবঙ্গের ভাগ্যবিড়ম্বিত সেই মেয়ে- শৈশবে যে মাকে হারিয়েছে এবং বাবা নিখোঁজ,দীর্ঘকাল পর্যন্ত মাসি আর মেসোমশাইকেই যে জেনে এসেছিলো মা আর বাবা বলে,,,দশ বছর বয়সে মাত্র বাহাত্তর ঘন্টার জন্য যার সিথিঁতে উঠেছিলো সিদুঁর আর হাতে শাখা নোয়া দশবছর বয়স থেকেই যাকে অতিক্রম করতে হয়েছে বিধবার জীবন একের পর এক বাধা-বিপত্তি, কখনো বা দাঁড়াতে হয়েছে জীবনের অপ্রকাশিত অমোঘ সত্যের মুখোমুখি হয়ে। কিন্তু দীপা কখনোই হাল ছাড়েনি। এর পিছনে অবদান শুধু মাত্র তার মাস্টার মশাই আর আর বাবার নিরন্তর এগিয়ে গিয়েছে ওর স্বপ্নের রেখা ধরে.....। পুরো উপন্যাস জুড়েই জীবনের বিভিন্ন ধাপে দীপাকে নিতে হয়েছে বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত। সবচেয়ে খারাপ সময়টা দীপা পার করেছে, বাবা অমরনাথের এবং মাস্টার মশাই সত্যসাধন এর মৃর্ত্যুর পর, পারিবারিক দুর্যোগকালে, চা-বাগানের চাকরিটা ফিরিয়ে দিয়ে....। কিশোরী দীপার এই দৃঢ়চেতা আপোষহীন ব্যক্তিত্ব সত্যি মুগ্ধ করার মতো। দীপার স্বপ্ন ছিলো আরও বড়, স্বপ্ন ছিলো এক উন্নত জীবনের। স্বপ্নগুলো একসময় পূরণ হলেও কালগর্ভে হারিয়ে যায় ওর আশপাশের আপন সব মানুষ...ওর মা, ছোট দুইভাই, বন্ধু-বান্ধব,এমনকি ভালোবাসার মানুষজনও। অতুল, অমল, শমিত, অর্জুন.... একে একে জীবন থেকে বিদায় নেয়ার পর দীপা গাঁটছড়া বেধে সংসার শুরু করে অলোকের সাথে। কিন্তু জীবন সম্পর্কে ওদের দৃষ্টিভঙ্গি পারস্পরিক বিপরীত হওয়ায়, সে সংসারও বেশিদিন স্থায়িত্ব পায় না। সমাজের সব শৃঙ্খলা, রীতিনীতি-র শিকল ভেঙ্গে জীবনের পথ বেয়ে দীপা এগিয়ে চলে একরাশ শূন্যতা হাতে নিয়ে......পাশে থেকে ওর সঙ্গী হয় আরেক শূন্য মানবী, দীপার বৃদ্ধা ঠাকুমা মনোরমা....।


শেখ মোহাম্মদ জিহাদ
05/09/2019

বইয়ের নাম: সাতকাহন; লেখক: সমরেশ মজুমদার; ধরন: সমকালীন উপন্যাস; প্রকাশক: নবযুগ প্রকাশনী যখন ক্লাস নাইনে পড়ি, আব্বা কিনে দিতেন শরৎচন্দ্রের উপন্যাস গুলো। এর পরে দিলেন সমরেশ মজুমদারের ‘কালবেলা’,কালপুরুষ, সাতকাহন” এইসব উপন্যাস পড়ে বুঝলাম এই বিখ্যাত লেখকরা নারীকে অনেক উঁচু আসনে বসিয়েছেন।দেখিয়েছেন কীভাবে তারা সকল প্রতিকুলতাকে কাটিয়ে উঠতে পারে। আজ থাকছে, সমরেশ মজুমদারের বিখ্যাত উপন্যাস “সাতকাহনের” বুক রিভিউ! নায়িকা বলবোনা, সংগ্রামী নারীর প্রতিক বলবো দীপাবলি কে। যার চাঞ্চল্যতা আর আত্ম সম্মানবোধ আমাদেরকে বুঝতে শিখিয়েছে বাস্তবতাকে কীভাবে রঙিন সুতোয় বাঁধতে হয়! দীপাবলীর মা অন্জলি, ঠাকুরমা মনোরমা, বাবা অমরনাথ, ছোট বেলার বন্ধু খোকন, বিশু তারা আর কেউ নয়—-শত বছর পরেও মনে হবে এই সমাজেরি আমরা কেউ। দীপাবলির প্রতিটা কথা, কর্মউদ্দীপনা, সকল প্রতিকুলতাকে উপেক্ষা করে এগিয়ে চলে, কীভাবে নিজের স্বপ্নগুলোকে ছুঁয়ে দেখা যায়,,,তা আমাদের জীবনের গল্প মনে হবে। শৈশব সবসময় আনন্দের আর স্মৃতিতে পরিপূর্ণ। উপন্যাসটি পড়তে গিয়ে আপনারও মনে হবে শৈশবেই আছি, সাথে থাকবে মায়ের বকুনি, শাসন আর বন্ধুদের চপলতা। তখন বাল্যবিবাহ এর প্রথা চালু ছিলো। দীপার সুন্দর শৈশব কেড়ে নিয়ে জোর করে বিয়ে দেয়া হয়। সেখান থেকে ফুলশয্যার পরদিনেই চলে আসা। পাঠকের মনকে নাড়া দিবে কালবৈশাখীর মতো। জীবন তো থেমে থাকেনা। বহতা নদীর মতো চলে। সকল বাধা পিছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়াতে হয়! তখন কেউ না কেউ পাশে এসে দাঁড়ায়। বোঝাতে সাহায্য করে, জীবনকে দ্রুতগামী ট্রেনের মতো চালাতে হয়।দীপা পেয়েছিলো তার শিক্ষক কে। যিনি দীপাকে বুঝিয়েছিলেন মেয়েরাও পারে!”। শুরু হলো জীবন যুদ্ধের এক মহা কাব্য। তিক্ত অভিজ্ঞতাকে মনের ভিতরে রেখে সে ম্যাট্রিক পাশ করলো ফাস্ট ডিভিশনে। এরপর জলপাইগুড়ি কলেজ, তারপর কলকাতা। সেই কিশোরী হয়ে উঠলো স্বতন্ত্র, বিদ্রোহী নারী। সমাজকে তুড়ি মেরে দেখিয়ে দিলো, নারী কোন অংশে কম নয়! তার বিধবা মা,ঠাকুরমা আর শিক্ষক রমলা সেনের অনুপ্রেরণায় হয়ে উঠলো দায়িত্ববান। আকাশকে নিতে চাইলো হাতের মুঠোয়। দুর্গম পাহাড়কে অতিক্রম করা তার নেশা হয়ে গেলো। মনোরমা বলেছিলেন,মাগো, জীবন হিমালয়ের চেয়ে বড়। সেখান থেকে যেটা খুঁজে নিতে চাইবে, সেটা খুঁজবে আন্তরিকভাবে।। কারও সাথে আপোষ করবিনা। আমার বয়সে কিছু খোঁজা যায়না, কিন্তু তোর বয়সটা ঠিকঠাক।”বলেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে নাতনীকে জড়িয়ে ধরিয়েছিলেন। এই কথাগুলোর মাধ্যমে নাতনীকে দেখতে চেয়েছিলেন আপোষহীন ও সংগ্রামী নারী হিসেবে। ভাইবা বোর্ডে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো,” আপনি কি বিয়ের আগ থেকে চাকুরী করেন? হ্যাঁ! সেইজন্যই তো বিয়েটা হলো; আজীবন যৌতুক পাবে।” এতো জানেন, বোঝেন প্রতিবাদ করেননা? প্রতিবাদ করলেই, আমি সংসার হারাবো। সবাই সন্দেহ করবে। দীপাবলি কে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, বৈধব্যে তুমি ছিলে রাশভারী! দীপা জবাব দিয়েছিলো, নিজেকে আড়াল করতে একটা কিছু নিয়ে থাকতে হয়।আমার পক্ষে এটা ছাড়া আর কিছুই করার মতো ছিলোনা। লেখক বাস্তবচিত্র আর নারীর শিকল ভাঙার গান দুটোকেই সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন! দুপুর পেরিয়ে গেলে অঞ্জলীর আলমারির হাতলে হাত দিলো দীপা! ওই দূর্ঘটনার পর থেকে রঙিন শাড়ি এড়িয়ে চলে। রঙিন শাড়ির গায়ে হাত দিতেই অদ্ভুত একটা শিরশিরানি এলো শরীরে।ব্যাপারটা এমন যে,, সে নিজেই অবাক হলো। তার চেহারা এইরকম? নিজেকে চিনতে পারছেনা এখন। বাহিরের ঘর পেরিয়ে আসতে সময় লাগলো। পা দুটো যেনো খুব ভারি হয়ে গেছে। এই যে বৈধব্য হলেই যে সাদা শাড়ি পরতে হয় তার প্রতীকী প্রতিবাদ করলো দীপাবলি। দীপাবলি তৎকালীন সমাজ নয়। আজকের অনেক সাহসী নারীর প্রতিচ্ছবি সে। তৎকালীন সমাজের অনিয়ম, ধর্মীয় গোড়ামির বিরুদ্ধে আপোষহীন এক চরিত্র। “সাতকাহন ” এক নারীর দুর্দান্ত জীবনের খুঁটিনাটির গল্প এই বইটা পড়ে চলেন, জীবনকে জানি। প্রতি পাতায় হেঁটে হেঁটে পড়ি, জীবনের আঙ্গিকতা। আসুন, আমরা নারীরা দীপাবলি হয়ে উঠি। #বইবাজার_মাসিক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_সেপ্টেম্বর_২০১৯


PAYMENT OPTIONS

Copyrights © 2018-2024 BoiBazar.com