ভূমিকা সাধারণত লেখকের আনন্দ হয় কোন পুস্তকের নতুন পুনর্মুদ্রণের সময়। কারণ, পাঠকের নিকট যে তার চাহিদা ফুরিয়ে যায়নি, পরিস্থিতি তা জানান দেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমার এই উপক্রমাণিকার পেছনে আনন্দ থাকলেও তা বিষাদ-সিক্ত। ৩৪ বছর পূর্বে যখন এই উপন্যাস ছাপা হয়, তখন উৎসর্গ পৃ্ষ্ঠায় উল্লেখিত দুই জনেই ছিলেন তরতাজা যুবক আত্মার আত্মীয়। এখন একজন চিরতরে গরহাজির পৃথিবী থেকে। তিনি কবি সানাউল হক। দুবছর পূর্বে প্রায়ত। অপর জন একেরেম আহসান গুরুতর অসুস্থ। আরো স্বরণ করতে হয় আব্দুল বারী ওয়ার্সী-কে তিন দশক পূর্বে আইয়ুব খানের মিলিটারি স্বৈরতন্ত্রের যুগে যিনি এই পুস্তক প্রকাশে নৈতিক সাহস পুরস্কার পায় “ক্রীতদাসের হাসি।” বর্তমানে জনাব আব্দুল বারী ওয়ার্সীও গুরুতর অসুস্থ। পঁচাত্তরের মুখোমুখি বয়স। তিনিই প্রথম প্রকাশক। পরবর্তী কালে এগিয়ে আসেন শ্রীচিত্তরঞ্জন সাহা। প্রকাশনার ক্ষেত্রে তিনি এক উজ্জ্বল গ্রহ এবং প্রাতঃস্বরণীয় জন। আমার ধন্যবাদ তাঁর উচ্চতায় পৌঁছাবে না। তাই চুপ করে গেলাম। ‘পুথিঘর লিমিটেড’ নিরঙ্কুশ অড়্রযাত্রী হোক দেশের গুমরাহী এবং ধর্মন্ধতা ধ্বংসে-এই গুভ কামনা রইল। শওকত ওসমান
শওকত ওসমান
জন্ম : জানুয়ারি, ১৯১৭ সালে পাড়া মেহেদী মহল্লায়। গ্রাম : সবলসিংহপুর, থানা : খানাকুল, মহকুমা : আরামবাগ, জেলা : হুগলী, রাজ্য : পশ্চিমবঙ্গ, রাষ্ট্র : ভারতবর্ষ, পিতা : শেখ মহম্মদ এহিয়া মাতা : গুলেজান বেগম। শওকত ওসমান তার সাহিত্য ক্ষেত্রের ছদ্মনাম। আসল নাম শেখ আজিজুর রহমান।
শিক্ষা : প্রথমে মক্তব, সবলসিংহপুর জুনিয়র মাদ্রাসা এবং পরে ১৯২৯-এ কলকাতা মাদ্রাসা-এ আলিয়াতে ভর্তি হন সপ্তন শ্রেণিতে। নবম শ্রেণিতে এ্যাংলাে-পার্সিয়ান শাখায় স্থানান্তর । ১৯৩৩-এ প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। ১৯৩৪-এ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি এবং ১৯৩৬ সালে প্রথম বিভাগে আই.এ.পাস। ভর্তি হন অর্থনীতিতে বি.এ. অর্নাস ক্লাসে। ১৯৩৯ সালে বি.এ. পাস। ১৯৪১-এ দ্বিতীয় শ্রেণিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা এম.এ.।
পুরস্কার : ১৯৬২ সালে আদমজী, ১৯৬৬ সালে বাংলা একাডেমি, ১৯৬৭ সালে প্রেসিডেন্টের প্রাইড অব পারফরমেন্স পদক, ১৯৮৩ সালে একুশে পদক, ১৯৮৬ সালে নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক, ১৯৮৮ সালে মুক্তধারা পুরস্কার, ১৯৮৯ সালে ফিলিপস্ সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯১ সালে টেনাশিস পুরস্কার এবং স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার, ১৯৯৬ সালে মাহবুবউল্লাহ ফাউন্ডেশন পদক।
মৃত্যু : সকাল ৭.৪০ মিনিট, ১৪ মে ১৯৯৮, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, ঢাকা।