‘মুসলিম ইতিহাসের সােনালী বিচার' শিরােনামে আমাদের আলােচ্য বইটিতে নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম], সাহাবায়ে কিরাম, প্রসিদ্ধ মুসলমান শাসকবর্গ ও কাজিদের সে-সব ফয়সালা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেগুলাে দ্বারা দুনিয়ায় ইনসাফ ও ন্যায়বিচারের সােনালি ঐতিহ্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। সেগুলাে দ্বারা পরবর্তীতে আগত শাসক ও বিচারকগণ মূল্যবান পথ-নির্দেশনা পেয়েছেন।
এসব ঘটনাবলি এজন্যও উল্লেখ করা প্রয়ােজন যে, এতে ইসলামি সমাজে আবারও সততা প্রতিষ্ঠা হবে । আর যেসব ইসলামি রাষ্ট্রে লুটতরাজ ও জুলুম-অত্যাচারের মহামারি যেভাবে দেখা দিয়েছে, তা থেকে জাতি মুক্তি পাবে, এবং ইসলামের বরকত দ্বারা যথাযথভাবে উপকৃত হওয়া যাবে।
এই বইটিতে বর্ণনাসূত্রে সত্যায়িত ইনসাফ ও ন্যায়বিচারের ঘটনাবলি সংকলন করা হয়েছে। সাবলীল ভাষায় কথােপকথনের ভঙ্গিমায় উপস্থাপনের কারণে বর্ণিত ঘটনাগুলাে পাঠকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেবে। বেশিরভাগ ঘটনাই নেওয়া হয়েছে নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), খুলাফায়ে ইসলাম ও মহান শাসকগণের । সূত্রের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
শায়খ আবদুল মালিক মুজাহিদ
শায়খ আবদুল মালিক মুজাহিদ একজন বিখ্যাত ইসলামী পণ্ডিত এবং একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। গত পঁয়ত্রিশ বছর ধরে তিনি সৌদি আরবে ব্যবসা করে আসছেন। পাকিস্তানের গুজরানওয়ালার নিকট একটি গ্রামের তাঁর জন্ম।
তার পরিবার ছিল চারুলিপিকর। তার গ্রামের অনেকেই ক্যালিওগ্রাফী করে জীবিকা নির্বাহ করত। একজন ক্যালিওগ্রাফার হওয়ার কারণে তিনি বুঝতে পারতেন, হাতের লেখার সৌন্দর্য কীভাবে ফুটে ওঠে। ইসলামী মূল্যবােধসম্পন্ন একটি পরিবারে তিনি প্রতিপালিত হন।
শায়খ আবদুল মালিক তাঁর পেশাগত জীবন শুরু করেন ১৯৭৪-রও আগে। ছােট্ট একটি কারখানায় একজন কারণিক হিসেবে। পরিবারের জীবিকাবহনের জন্য দিনরাত কাজ করতেন। ইসলাম ও জাগতিক বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্য রক্ষা করে চলার উপযােগী শিক্ষা তিনি পেয়েছিলেন। এই শিক্ষার ফলে জীবনের উন্নতির পথে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ শক্তভাবে মুকাবিলা করতে তিনি সক্ষম হন।
১৯৮০ সালে তিনি সৌদি আরব গমন করেন। একটি বিজ্ঞাপন কোম্পানীতে নামমাত্র বেতনে চাকরিতে যােগ দেন। কিন্তু এটা ছিল তাঁর জীবনের সফলতার পথে প্রথম পদক্ষেপ। সামান্য কিছুদিন পরই রিয়াদের শিক্ষামন্ত্রণালয় হতে একটি চাকরির প্রস্তাব পেলেন। জীবনের স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি কঠিনভাবে তার কর্তব্য পালন করে যেতে থাকেন। ফলশ্রুতিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে যােগ দেওয়ার সুযােগ হল। সেখানে থাকার সুবাদে তিনি বিশ্বের সেরা একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন-দারুসসালাম। সেই থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
দারুসসালাম পাবলিশার্স
দারুসসালাম একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানী। ছােট একটি বাড়ী হতে এর যাত্রা শুরু। বর্তমানে বিশাল প্রতিষ্ঠানের রূপ নিয়েছে। বিশ্বের পঁয়ত্রিশটি দেশে এর বিশাল নেটওয়ার্ক রয়েছে। বর্তমানে এটি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, চীন, পাকিস্তান, ইন্ডিয়া এবং আরও অনেক দেশে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
যুবকদের প্রতি তার আহ্বান
১. কী ঘটেছে বা কী ঘটবে, সেটা একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ীই হবে। সেখানে আমাদের কোনও হস্তক্ষেপ নেই। কাজেই আমাদের উচিত সৃষ্টিকর্তার প্রতি পরম বিশ্বাস রাখা।
২. জীবনের লক্ষ্যের প্রতি তােমাকে খুবই আন্তরিক হতে। হবে।
৩. তােমার প্রথম এবং প্রধান চেষ্টা থাকবে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক গভীর করার। কারণ এটাই সফলতার মূল চাবি।
৪. জীবনে বড় কিছু পেতে হলে তােমাকে আগে একটা পথ বেছে নিতে হবে। এরপর আন্তরিকতার সহিত আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে হবে। আমরা তার নেক হায়াত কামনা করছি।